মশা ক্ষুদ্র হলেও আপনার ভোট যেন খেয়ে না ফেলে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ডেঙ্গু একটি সমস্যা আকারেই দেখা দিয়েছে। কাজেই এখন থেকেই নব-নির্বাচিত মেয়র এবং কাউন্সিলরদের এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।’

২৭ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) তাঁর নিজ তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নব-নির্বাচিত মেয়র এবং কাউন্সিলরদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মশা আপনার ভোট যেন খেয়ে না ফেলে সেটা নিশ্চয়ই আপনাকে দেখতে হবে। মশা ক্ষুদ্র হলেও অনেক শক্তিশালী। এটা মাথায় রাখতে হবে।’

নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, ‘দেশের সার্বিক উন্নয়ন করতে হলে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে হবে। যে কোন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির জীবনে সবচেয়ে প্রয়োজন জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করা। কাজেই সেই আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেই স্ব-স্ব দায়িত্ব আপনারা পালন করবেন,সেটাই আমরা চাই।’

উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য জনপ্রতিনিধিদের মনিটরিং জোরদার করার পাশাপাশি সরকারও এটি পর্যবেক্ষণের উদ্যোগ নেবে বলেও জানান শেখ হাসিনা।

এর অগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর কার্যালয়ের শাপলা হলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস এবং উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলামকে শপথ বাক্য পাঠ করান।

এছাড়া স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম একই স্থানে দুই সিটি কর্পোরেশনের সাধারণ ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত আসনের নির্বাচিত ১৭২ জন কাউন্সিলরকে শপথ বাক্য পাঠ করান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দিনরাত পরিশ্রম করে দেশের উন্নয়নের প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়ন করি এবং এর জন্য বাজেট দেই। এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কি-না সেটা পর্যবেক্ষনের ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। সেটা নিবিড় ভাবে আমরা পর্যবেক্ষণ করবো।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা যারা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি রয়েছেন তাঁদের কাছে আমার এই অনুরোধটাই থাকবে-একটা কথা মনে রাখবেন যে, জনগণ আপনাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। জনগণের কাছে আপনারা অঙ্গীকারাবদ্ধ।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ আপনারা যে শপথ নিয়েছেন সেই শপথের কথা মনে রেখে আপনাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে যারা আপনাকে ভোট দিয়েছে এবং যারা দেয় নাই অর্থাৎ এলাকাবাসী, সকলের সুযোগ-সুবিধা আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বহুদলীয় গণতন্ত্রে জনগণের ইচ্ছে মত ভোটাধিকার প্রয়াগের সুযোগ থাকায় জনগণ তাঁদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিলেও যিনি নির্বাচিত হবেন তিনি সকলের জন্যই নির্বাচিত। এটা মনে রাখতে হবে এবং সার্বিক উন্নয়নের জন্য কাজ করতে হবে। এটাই রাজনীতির নিয়ম।’

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘তাঁর সরকার অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। অনেক প্রকল্প গ্রহণ করেছে। কাজেই সেগুলোর যেন যথাযথ বাস্তবায়ন হয় সেদিকে আপনারা দৃষ্টি দেবেন।’

এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম এবং নব-নিযুক্ত দুই মেয়র।

উল্লেখ্য, ১ ফেব্রুয়ারি ডিএসসিসি ও ডিএনসিসি’র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে নগরবাসী ভোটের মাধ্যমে আগামী ৫ বছরের জন্য আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসকে ডিএসসিসি’র এবং আতিকুল ইসলামকে ডিএনসিসি’র মেয়র হিসেবে নির্বাচিত করেছে।

নির্বাচিত দুই মেয়রের পাশাপাশি ডিএসসিসিতে ১শ’ কাউন্সিলরের মধ্যে ৭৫ জন সাধারণ এবং সংরক্ষিত আসন থেকে ২৫ জন মহিলা কাউন্সিলর এবং ডিএনসিসিতে ৭২ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ৫৪ জন সাধারণ ও সংরক্ষিত আসন থেকে ১৮ জন মহিলা কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন।