রাজউক ও দুর্নীতি একাকার এবং সমার্থক শব্দ: টিআইবি

প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০২০, ১৫:১৬

সাহস ডেস্ক

রাজউক থেকে বিনা ঘুষে সাধারণ মানুষ সেবা পেয়েছেন, এমন ঘটনা বিরল বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, রাজউক কর্মকর্তা, দালাল ও সেবাগ্রহীতাদের একাংশের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় আঁতাতের মাধ্যমে চুক্তি করে সুনির্দিষ্ট হারে ঘুষ নেওয়া হয়। রাজউক ও দুর্নীতি একাকার এবং সমার্থক শব্দ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে ‘রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক): সুশাসনের চ্যালেঞ্জ উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ আখ্যা দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, ২০১৮ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত চালানো এই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যক্তি পর্যায়ে নকশা অনুমোদনে ৫০ হাজার থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা, রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার পর্যায়ে ২ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা টাকা পর্যন্ত রাজউক কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে হয়। আবার ১০ তলার বেশি ইমারতের নকশা অনুমোদনে রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার পর্যায়ে ফি-র অতিরিক্ত ১৫ লাখ থেকে ৪০ লাখ টাকা এবং বিশেষ প্রকল্পের ক্ষেত্রে রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার পর্যায়ে ১৫ লাখ থেকে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়।

গবেষণা পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, নিয়ন্ত্রণমূলক কাজকে গুরুত্ব না দিয়ে উন্নয়নমূলক কাজে অধিক গুরুত্বারোপ এবং আবাসন ও রিয়েল স্টেট ব্যবসার মাধ্যমে মুনাফাকে প্রাধান্য দেয় রাজউক। অন্যদিকে পরিকল্পনা প্রণয়ন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলেও তা বারবার উপেক্ষিত থাকে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজউকে ছাড়পত্র অনুমোদনে ঘুষের পরিমাণের নির্ধারকগুলো হচ্ছে রাস্তার প্রস্থ, জমির পরিমাণ, জমির ব্যবহার, জমির অবস্থান বা এলাকা, সেবাগ্রহীতার ধরন। এছাড়া সেবাগ্রহীতা অনেক সময় বহিরাগত দালালদের মাধ্যেমে হয়রানি ও অর্থ আত্মসাতের শিকার হয়ে থাকেন। আবার জরিপের সময়ও চুক্তিভিত্তিক নিয়ম বহির্ভূত অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। রাস্তা প্রশস্ত দেখানোর জন্য ব্যক্তি পর্যায়ে ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত দেয়া হয়। ছাড়পত্র অনুমোদনে ব্যক্তি পর্যায়ে ১৫ হাজার থেকে ৮০ হাজার পর্যন্ত এবং রিয়েল এস্টেট ডেভলপার পর্যায়ে এক লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত দিতে হয়।

গবেষণায় বলা হয়েছে, রাজউকে নবম থেকে বিশতম গ্রেড পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু কিছু ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব, স্বজনপ্রীতি, চেয়ারম্যানের ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে।

টিআইবির পক্ষ থেকে উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণের পৃথক একটি সংস্থা গড়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কারণ সংস্থাটির মতে রাজউক যেহেতু মুনাফা অর্জনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। তাই তাকে এ কাজ থেকে ফিরিয়ে আনা কঠিন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত