আইসিজের আদেশ মানবতার জয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২০, ১৯:১৯

সাহস ডেস্ক

রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) যে রায় দিয়েছে তাকে মানবতার জয় এবং বিশ্বের মানবাধিকারকর্মীদের জন্য মাইলফলক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) ইকুয়েডর থেকে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, এটি মানবতার জন্য এক বিজয়, সব দেশের মানবাধিকারকর্মীদের জন্য এক মাইলফলক। এটি গাম্বিয়া, ওআইসি, রোহিঙ্গা এবং অবশ্যই বাংলাদেশের জন্য এক বিজয়। মানবতা এবং মাদার অব হিউম্যানিটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মঙ্গল হোক।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি আশাবাদী যে এমন আদেশ বিশ্বে জাতিগত নির্মূল ও গণহত্যার পুনরাবৃত্তি বন্ধ করবে।

এর আগে আজ বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার করা মামলার রায়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে চারটি অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালত। আদালত সর্বসম্মতভাবে এ আদেশ জারি করেছে। একই সঙ্গে রাখাইনে এখন যে রোহিঙ্গারা আছেন, তাদেরকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য মিয়ানমারকে সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ দেন আদালত।

আদালতের চারটি আদেশ হলো—মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও অন্যান্য সশস্ত্রবাহিনীগুলোকে সব ধরনের গণহত্যার অপরাধ ও গণহত্যার ষড়যন্ত্র থেকে বিরত থাকার নির্দেশ, গণহত্যা সনদের ধারা ২ এর আওতায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সব ধরনের সুরক্ষা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা মিয়ানমারকে পূরণ করতে হবে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সদস্যদের হত্যা, নিপীড়ন বন্ধ এবং বাস্তুচ্যুতির মতো পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে মিয়ানমারের বিরত থাকা।

রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা দেয়ার জন্য মিয়ানমারের গৃহীত ব্যবস্থাগুলো আগামি চার মাসের মধ্যে একটি রিপোর্ট আদালতের সামনে উপস্থাপন করতে হবে। এরপর এই মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত প্রতি ছয় মাস পর পর আদালতকে জানাতে।

আদেশ ঘোষণার শুরুতে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় গাম্বিয়ার পক্ষে রোহিঙ্গা নিপীড়ন ও গণহত্যার যেসব আলামত আদালতের কাছে উপস্থাপন করা হয়েছিল, সেসব বিরোধের ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি ইউসুফ।

আদালত মনে করেন, গণহত্যা সনদের ধারা ২ এর আলোকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী একটি বিশেষ সুরক্ষার অধিকারী (প্রোটেক্টেড) গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচ্য। সনদের সংশ্লিষ্ট ধারাগুলোর আওতায় (ধারা ৮ ও ৯) এই মামলা দায়েরের গাম্বিয়ার প্রাইমা ফেসি অধিকার আছে বলে জানিয়েছেন আদালত। এ বিষয়ে আদালতের এখতিয়ার নেই বলে মিয়ানমার যে দাবি করেছে আদালত তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। জাতিসংঘ তথ্য অনুসন্ধানী দলের প্রতিবেদনে যেসব বিবরণ উঠে এসেছে তার আলোকে গাম্বিয়া মিয়ানমারকে যে নোট ভারবাল দিয়েছিল তা বিরোধের ভিত্তি হিসেবে গ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন আদালত।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত