অবস্থান ধর্মঘটে 'শিবির সন্দেহে' নির্যাতনের শিকার মুকিম চৌধুরী

প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২০, ১৪:০১

সাহস ডেস্ক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে 'শিবির সন্দেহে' নির্যাতনের শিকার মুকিম চৌধুরী বিচারের দাবিতে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়েছেন। নির্যাতনের তাকেসহ বাকীদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়।

মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের চার শিক্ষার্থীকে তিন দফায় আড়াই ঘণ্টা ধরে পেটায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

গতকাল বুধবার বিকেল থেকে আজ বৃহস্পতিবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এখনো অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন মুকিমুল। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দোষীদের বিচার না করা পর্যন্ত তিনি এই অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

মুকিম চৌধুরী জানান, তাকে মারধর এবং বিনা কারণে পুলিশে দেয়ার ঘটনায় জড়িতদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত তিনি সেখানে অবস্থান করবেন। এজন্য জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগ নেতা ও ডাকসু হল সংসদের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় যতক্ষণ জড়িতদের বিচার না হবে, আমাদের নিরাপত্তা না দেয়া হবে, আমি এখান থেকে কোথাও যাবো না। আমাকে অন্যায়ভাবে সন্দেহ করা হইছে এবং বেদম মারা হইছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই। তাকে মারধরের ঘটনায় সরকার-সমর্থক ছাত্রলীগের হল কমিটির কয়েকজন নেতা এবং হল সংসদের কয়েকজন অংশ নিয়েছেন বলেও মুকিম অভিযোগ করেন।

এদিকে মুকিমুলের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে তার সঙ্গে অবস্থান নিয়েছেন ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। মুকিমুলের সারা মুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হাঁটতে গিয়ে ভারসাম্য রক্ষার জন্য তিনি স্ট্রেচার ব্যবহার করছিলেন।

মুকিমের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যে মানববন্ধন করেছেন। মুকিম এই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। অন্যদিকে, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য জহুরুল হক হল কর্তৃপক্ষ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

প্রসঙ্গত, ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই চার ছাত্রকে মঙ্গলবার রাতে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের গেস্টরুমে (অতিথি কক্ষ) ডাকেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। পরে রাত ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। রাত ৩টার দিকে হল প্রশাসনের সহযোগিতায় তাদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়।

মারধরের শিকার চার শিক্ষার্থী হলেন- রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সানোয়ার হোসেন, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজম্যান্ট বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মুকিম চৌধুরী, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মিনহাজ উদ্দিন এবং আরবি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আফসার উদ্দিন।

সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের শিক্ষার্থীরা জানান, ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ততার অভিযোগ এনে গত বছরের অক্টোবরেও মুকিমুল ও আফসারকে পুলিশে সোপর্দ করেছিলেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। সেবারও তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। এরপর থেকে তারা হলেই থাকছেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত