রাখাইনে রোহিঙ্গা গণহত্যার প্রমাণ পায়নি মিয়ানমারের সরকারি প্যানেল

প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২০, ১৩:৩৪

সাহস ডেস্ক

মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের মংডুতে কোন ধরনের গণহত্যা বা ধর্মীয় নিপীড়নের কোনও প্রমাণ পায়নি মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে নিয়োগ দেওয়া প্যানেল সদস্যরা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এবিষয়ে মিয়ানমারের দিকে আঙ্গুল তুললেও সোমবার (২০ জানুয়ারি) এসব অভিযোগের কোনও ভিত্তি খুঁজে পায়নি প্যানেলটি।

২০১৭ সালের আগস্ট মাসে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতনের শিকার হয়ে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে রাখাইনের সাড়ে ৭ লাখ সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।

জাতিসংঘ তদন্ত কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিলো, রোহিঙ্গাদের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেওয়াসহ তাদের নারীদের গণধর্ষণ করা হয়েছে। একইসাথে সেসময় রাজ্যটিতে “গণহত্যাচেষ্টায়” নির্বিচারে রোহিঙ্গা হত্যা হয়েছে এবং শতশত রোহিঙ্গা অধ্যুষিত পুড়িয়ে দিয়ে তাদেরকে সেখান থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে মিয়ানমারের সরকারি প্যানেল তাদের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন তৈরি করেছে। যেখানে গ্রামবাসী ও দেশটির নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যদের সাক্ষাৎকার নিয়ে জানা গিয়েছে, রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা ৩০টি পুলিশ পোস্টে হামলা চালিয়েছিলো এবং তারা তাদের ওপর হামলা চালাতে উস্কানি দিয়েছে। এছাড়া প্রতিবেদনটিতে, পুরো পরিস্থিতিকে একটি “আন্তঃদলীয় সশস্ত্র সংঘর্ষ” বলে বর্ণনা করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, যেভাবে ঘটনার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে রাখাইনে সেরকম কোনও হত্যাকাণ্ড অথবা বাস্তুচ্যুত করা অথবা পরিকল্পিতভাবে মুসলিম জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

মিয়ানমার সরকার এই তদন্ত কমিশনটি ২০১৮ সালে গঠন করতে বাধ্য হয়। কমিশনে দুইজন মিয়ানমারের ও দুইজন বিদেশি সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছিলো। প্যানেলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রতিবেদনটি মিয়ানমার সরকারকে দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও নিশ্চিত নয় কবে এটি জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে।

এদিকে রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ মিয়ানমারের সরকারি তদন্ত প্রতিবেদনটিকে, মূলঘটনা ভিন্নখাতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হিসেবে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, আমরা দশকের পর দশক ধরে নির্যাতিত হয়েছি। আমাদের হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের নারীদের গণধর্ষণ করা হয়েছে। আমাদের শিশুদের আগুনে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে এবং ঘর-বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছে। এসব ঘটনা যদি গণহত্যা না হয়, তবে গণহত্যা আসলে কী?

জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত যা আন্তর্জাতিক বিচার আদালত নামে পরিচিত, এই সপ্তাহে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলায় জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধের বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত জারি করবে।

গতবছরের নভেম্বরে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত