রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী বাদে তোশাখানায় উপহার জমা দেন না মন্ত্রী-এমপিরা

প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০২০, ১৪:০৬

সাহস ডেস্ক

সরকারি বিধি অনুযায়ী, একজন সরকারি কর্মকর্তা নির্ধারিত মূল্যের তুলনায় বেশি মূল্যমানের কোনও উপহার পেলে তা তোশাখানায় জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে। সরকারি উপহারগুলো বা উপহারের সমপরিমাণ অর্থ যথাসময়ে তোশাখানায় জমা দেওয়ার বিধানটি প্রযোজ্য হবে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, মন্ত্রী, ডেপুটি স্পিকার, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ সব সরকারি কর্মকর্তার ওপর।

তোশাখানা জাদুঘরের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঐতিহাসিক মূল্য আছে এমন উপহার পেলে বিধানটি সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। কিন্তু, নিয়মিতভাবে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী তাদের পাওয়া উপহারগুলো তোশাখানায় জমা দিলেও সেই তালিকায় মন্ত্রী-এমপি ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম নেই বললেই চলে।

এ বিষয়ে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, একজন সরকারি কর্মকর্তার দেশের ভেতরে কারও থেকে কোন উপহার গ্রহণের নিয়ম নেই। তবে বিদেশে গেলে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে উপাহার নেয়া যেতে পারে। তবে সেটার মূল্য যদি নির্ধারিত পরিমাণের চাইতে বেশি হয় তাহলে সেটা সরকারি তোশাখানায় জমা দেয়ার জন্য মন্ত্রী পরিষদ সচিবের কাছে একটি চিঠি দিতে হবে। সেটা ব্যবহার করা যাবে না।

তোশাখানা বিধিতে বলা আছে, শুধুমাত্র বিদেশি বিশিষ্টজনদের থেকে একজন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার ৩০ হাজার টাকা বা তার কম মূল্যের উপহার গ্রহণ করতে পারবেন। প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্টের ক্ষেত্রে এই মূল্যমানের সীমা ৫০ হাজার টাকা এবং সংসদ সদস্যসহ অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ পাঁচ হাজার টাকা নির্ধারণ করা আছে।

এদিকে তোশাখানা জাদুঘর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান ও বিগত সময়ের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী নিয়মিতভাবে তাদের উপহার তোশাখানায় জমা দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু, তাদের এই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করছেন না মন্ত্রী, এমপি ও সরকারি কর্মকর্তারা। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাইরে সর্বশেষ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তার উপহারসামগ্রী মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাধ্যমে তোশাখানা জাদুঘরে জমা দিয়েছেন।

এছাড়া বিগত সময়ে তোশাখানায় উপহার জমা দেওয়া ব্যক্তিদের তালিকায় রয়েছে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের নাম।

বিভিন্ন সময়ে পাওয়া উপহার তোশাখানায় জমা দেওয়ার প্রসঙ্গে নসরুল হামিদ বলেন, আমরা তো বিভিন্ন দেশে সফরে যাই। অন্য দেশের প্রতিনিধিরা আসেন। তাদের কাছ থেকে উপহার পেয়ে থাকি। আমি রেজিস্ট্রার মেনটেইন করে স্বচ্ছতার সঙ্গে সেগুলো তোশাখানায় জমা দিয়েছি। অন্যরা এগুলোকে নিজের সম্পদ মনে করেন। তারা জমা দেন না। তাদের লজ্জা হওয়া উচিত।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত