বাংলাদেশের বিজয়ের ৪৮ বছর

প্রকাশ : ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৩:১১

সাহস ডেস্ক

আজ মহান বিজয় দিবস। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন দেশের অভ্যুদয় ঘটে। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের বিজয়ের ৪৮ বছর পূর্ণ হয়েছে।

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশের জন্য জীবন দেয়া শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থা নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশিরা দেশে ও বিদেশে দিবসটি পালন করবেন।

জাতির এই গৌরবান্বিত দিনটি স্মরণে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশ সেজেছে এক অপূর্ব সাজে। ভোরে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হয়। সূর্যোদয়ের সময় সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সরকারি এ ছুটির দিনে দেশের সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাসমূহ আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় দৈনিকগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। সরকারি ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ও রেডিওতে মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করা হচ্ছে।

দিনের কর্মসূচি হিসেবে সকালে ঢাকাস্থ জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। মুক্তিযোদ্ধা এবং সশস্ত্র বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সদস্যরা এতে অংশ নেন। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও উপস্থিত ছিলেন।

দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডাসহ অন্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।

বিকালে বঙ্গভবনে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে সংবর্ধনার আয়োজন করবেন রাষ্ট্রপতি।

বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের মিশনগুলো জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সংবর্ধনার আয়োজন করবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেয়া হবে।

সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা রাজধানীর শিশু পার্কে বিনা টিকিটে প্রবেশ করতে পারবে। এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, হাসপাতাল, জেলখানা ও সরকারি শিশুসদনসহ অনুরূপ প্রতিষ্ঠানগুলোতে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া পৃথক বাণী দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, বাংলাদেশ এবং ইউনেসকো আগামী বছর যৌথভাবে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করবে। আমরা ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তোলার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।

তিনি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে দেশ, গণতন্ত্র ও সরকারবিরোধী সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের এ উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য এ বিজয় দিবসে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, লাখো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সম্মিলিত প্রচেষ্টার বিকল্প নেই। তাই আসুন মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ও চেতনা বাস্তবায়নে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আরও বেশি অবদান রাখি এবং দেশ ও জাতিকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেই। সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হোক, মহান বিজয় দিবসে এ আমার প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত