ঢাকায় ২৩৮ কিলোমিটার আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রোরেল নির্মাণের উদ্যোগ

প্রকাশ : ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৬:২৪

সাহস ডেস্ক

রাজধানী ঢাকা শহরের যানজট সমস্যা নিরসনে সরকার ২৩৮ কিলোমিটার পাতাল রেল (সাবওয়ে বা আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রোরেল) নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। এ লক্ষ্যে আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রো নির্মাণে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা (প্রথম সংশোধন) প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে সেতু বিভাগ

ঢাকা শহরে সাবওয়ে (আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রো) নির্মাণে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা (প্রথম সংশোধন)’ প্রকল্পটি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়/সেতু বিভাগের উদ্যোগে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বাসেক) বাস্তবায়ন করবে। 
সংশোধিত প্রস্তাব অনুযায়ী, এর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে সরকার খরচ করবে ৩২১ কোটি ৮৫ লাখ ২০ হাজার টাকা। মূল প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ছিল ২২৪ কোটি ৫৯ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি শুরু হয়ে ২০২০ সালের ৩০ এপ্রিল শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সময় বাড়িয়ে ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময় চাওয়া হয়েছে।

প্রকল্প সূত্র জানায়, পাতাল রেল বা সাবওয়ে নির্মাণের জন্য প্রাথমিকভাবে চারটি রুট চিহ্নিত করা হয়েছিল, যার আনুমানিক দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ৯০ কিলোমিটার। কিন্তু পরে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইন্টেরিম তাদের এক প্রতিবেদনে মোট ২৩৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সাবওয়ে নির্মাণের সম্ভাব্যতার কথা সুপারিশ করেন।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বর্তমানে আরএসটিপিতে (কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা) প্রস্তাবিত এমআরটি লাইন-১ ও এমআরটি লাইন-৬ এর এলাইনমেন্টের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ঢাকা শহরে সাবওয়ে, পূর্ণ যোগাযোগ স্থাপন করতে মোট ২৩৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সাবওয়ে নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা উপস্থাপন করে। এ সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্পের গত জুন পর্যন্ত ক্রমপুঞ্জিত ব্যয় ১০১ কোটি ৩৭ লাখ ৪২ হাজার টাকা, যা অনুমোদিত ব্যয়ের ৩১ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং বাস্তব অগ্রগতি ৩৫ শতাংশ।

সেতু বিভাগ বলছে, ঢাকা শহরে বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৭০ লাখ। এখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রায় ৭ হাজার ৯৫০ জন। মোট সড়কের দৈর্ঘ্য ১ হাজার ২৮৬ কিলোমিটার, সড়কের ঘনত্ব ৯ দশমিক ১ শতাংশ। অথচ মেট্রোপলিটন শহরে সড়কের আদর্শ মান ২০ থেকে ২৫ শতাংশ। এখানে ফাঁকা জায়গা ৩ দশমিক ০৯ শতাংশ অথচ আদর্শ মান ১৫ থেকে ২০ শতাংশ। ঢাকা শহরে যানজটের কারণে প্রতি বছর প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে সেতু বিভাগ ঢাকা শহরে পাতাল রেল (পাতাল মেট্রোরেল) নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

সেতু বিভাগ আরও বলছে, সড়কপথে যেখানে ১০০ বাসে ঘণ্টায় ১০ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারে, সেখানে সাবওয়েতে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল সম্ভব। তবে বিদ্যমান সড়কের ওপর মেট্রো বা সাবওয়ে নির্মাণ করা হলে সড়কের কিছু অংশ দখলের ফলে যানজট কমার ক্ষেত্রে তেমন প্রভাব ফেলবে না এবং নির্মাণকাজ চলার সময় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হবে। মাটির নিচে সাবওয়ে বা আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রো নির্মাণ করা হলে জনসংখ্যার একটি বিরাট অংশ মাটির নিচ দিয়ে চলাচল করবে। ফলে ভূমির উপরিভাগ যাতায়াতকারী জনসংখ্যা কমবে এবং যানজটও অনেকাংশে কমবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত