খালেদার মেডিক্যাল প্রতিবেদন আসেনি, আদালতে দুপক্ষে উত্তেজনা

প্রকাশ : ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ১১:৪১

সাহস ডেস্ক

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মেডিকেল প্রতিবেদন এবং শুনানির জন্য দুই সপ্তাহ সময় প্রার্থনা করেন অ্যাটর্নি জেনারেল। আদালত আগামী ১১ ডিসেম্বর মধ্যে মেডিকেল প্রতিবেদন দাখিল এবং শুনানির জন্য ১২ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় দেন।

আজ বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ছয় সদস্যের বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়।

শুনানির শুরুতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ডের বরাত দিয়ে আদালতকে জানান, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কিছু স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাকি আছে, সেগুলো করতে সময় লাগবে।’

নতুন তারিখ নির্ধারণের পরই আদালতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল শুরু হয়। খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনসহ অন্যরা আজকের মধ্যেই শুনানি করার দাবি জানান। একপর্যায়ে প্রধান বিচারপতিদের নেতৃত্বে বিচারকরা এজলাস ত্যাগ করেন।

জয়নুল আবেদীন বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ, আগে তার জামিন দেন, প্রয়োজনে শুনানি পরে হোক। তিনি খালেদা জিয়ার অন্তবর্তী জামিন প্রার্থনা করেন। এর বিরোধিতা করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় করা খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদনের ওপর আপিল বিভাগে শুনানির জন্য আজ বৃহস্পতিবার দিন ধার্য ছিল। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির বেঞ্চ গত ২৮ নভেম্বর এক আদেশে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে জানাতে বিএসএমএমইউ ভিসিকে নির্দেশ দেন। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করতে বলা হয় ওই নির্দেশনায়। একই সঙ্গে গত ৭ অক্টোবর গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্টও দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

এ ছাড়া ৫ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানি ও আদেশের জন্য দিন ধার্য করা হয়। এ অবস্থায় আপিল বিভাগের ওই আদেশের কপি গত ২ ডিসেম্বর বিএসএমএমইউ ভিসির কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু গতকাল রাত পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট ভিসির কোনো জবাব পাননি বলে জানা গেছে।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত বছর ২৯ অক্টোবর খালেদা জিয়াকে সাত বছর কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন খালেদা জিয়া। একই সঙ্গে জামিনের আবেদন করা হয়। হাইকোর্ট গত ৩১ জুলাই জামিনের আবেদন সরাসরি খারিজ করে দেন। এই খারিজের রায়ের বিরুদ্ধে গত ১৪ নভেম্বর আপিল করেন খালেদা জিয়া। এই আবেদনের ওপর গত ২৮ নভেম্বর আপিল বিভাগে শুনানি হয়।

এই শুনানিতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ৭ অক্টোবর একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। এই মেডিক্যাল বোর্ড ৩০ অক্টোবর রিপোর্ট দেয়। তিনি বলেন, এই বোর্ড বলেছে, খালেদা জিয়ার যে চিকিৎসা হচ্ছে তাতে তিনি ভালো হচ্ছেন না। তাঁর আরো ভালো চিকিৎসা দরকার।

খালেদা জিয়ার আইনজীবীর এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষায় নতুন মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের নির্দেশ দেন। এই নতুন মেডিক্যাল মোর্ডের রিপোর্ট ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে দাখিল করতে নির্দেশে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষায় গত ৭ অক্টোবর গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্টও দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়।

সুপ্রিম কোর্ট ও নিম্ন আদালতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এখন ১৭টি মামলা বিচারাধীন। এ পর্যন্ত দুটি মামলায় (জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা) তাঁর ১৭ বছর কারাদণ্ড হয়েছে। এর মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছর সাজার বিরুদ্ধে করা আপিল আপিল বিভাগে এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাত বছর সাজার বিরুদ্ধে করা আপিল হাইকোর্টে বিচারাধীন। 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত