'ছাত্ররাজনীতি' নয়, সংগঠনভিত্তিক ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে বুয়েট

প্রকাশ | ১০ অক্টোবর ২০১৯, ১৬:০৯

ছাত্ররাজনীতি নয়, বরং সংগঠনভিত্তিক ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। এসময় তাদের দাবিগুলো বুঝতে পারার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

বুয়েটের ছাত্র আবরার হত্যার প্রতিবাদ ও খুনীদের সর্বোচ্চ শাস্তিসহ ১০ দফা দাবিতে তৃতীয় দিনের আন্দোলন চলছে বুয়েটে। এক পর্যায়ে দুপুরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপ করেন আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া তিন শিক্ষার্থী।

বুয়েটের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শীর্ষ সংশপ্তক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে নয়। আমরাও স্বীকার করে নিই যে আমাদের দেশের ইতিহাসে ছাত্ররাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। কিন্তু আজকে বুয়েটে যে নষ্ট ছাত্ররাজনীতি হয়েছে, যার জন্য আমরা আসলে বেঁচে থাকতে পারছি না, যার জন্য হলে ও ক্যাম্পাসে প্রতিটি শিক্ষার্থী ত্রাসের মধ্যে থাকে, আমাদের আন্দোলন তার বিরুদ্ধে। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই, কারণ তিনি এ বিষয়টির স্বীকৃতি দিয়েছেন। আমাদের আন্দোলনটি আসলে রাজনীতির বিরুদ্ধে নয়, বরং শুধুমাত্র বুয়েট ক্যাম্পাসে সংগঠনভিত্তিক ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে।’

শীর্ষ বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের দাবির বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন এবং এ বিষয়ে মিডিয়ার সামনে কথা বলেছেন। তিনি এও বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠান চাইলে এটি বন্ধ করে দিতে পারে এবং সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় কোনো প্রভাব থাকবে না। এর জন্য প্রয়োজন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সৎসাহস ও সদিচ্ছা। আশা করব, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর আমাদের প্রশাসন ও উপাচার্য এ বিষয়ে পিছিয়ে থাকবেন না। উপাচার্য স্যার আসবেন, আমাদের সব প্রশ্নের উত্তর দেবেন এবং আমাদের দাবিগুলো মেনে নেবেন।’

পুলিশের সাথে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ প্রসঙ্গে শীর্ষ বলেন, ‘পুলিশের সঙ্গে দুর্ব্যবহার বা আলামত আটকে রাখার চেষ্টার মতো কোনো কাজ আমরা করিনি। আমাদের দাবি ছিল, হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য যেন সিসিটিভি ফুটেজের একটি কপি রাখা হয়। আমরা সে বিষয়ে নেগোশিয়েট করেছি, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং সেটি নিশ্চিত করা হয়েছে। উপাচার্যের সঙ্গে কোনো দুর্ব্যবহারও আমরা করিনি, আমরা তাঁর কাছে শুধু কিছু উত্তর চেয়েছি এবং দাবি জানিয়েছি।’

অভিযোগ এসেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. সাইফুল ইসলামের সাথে দুর্ব্যবহারের। তখন চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী অন্তরা মাধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘উপাচার্য স্যারকে আমরা মানববন্ধনের মাধ্যমে আসার সুযোগ করে দিয়েছিলাম। তার সঙ্গে আমরা যদি কোনো দুর্ব্যবহার করে থাকি, তার কাছে আমরা ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’

উপাচার্যের প্রতি আহ্বান জানিয়ে অন্তরা বলেন, ‘স্যার, আপনি আসুন, আমরা শুধু কথা বলব। আপনার প্রতি আমাদের কোনো রাগ নেই।’

প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিয়ে অন্তরা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের বিষয়গুলোর স্বীকৃতি দিয়েছেন এবং এগুলো নিয়ে কথা বলেছেন। উনি আমাদের সবার অভিভাবক, ওনার জন্যই ব্যাপারগুলো এত দ্রুত সুষ্ঠুভাবে হয়ে আসছে। আমরা বিশ্বাস করি, এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্যই সম্ভব হয়েছে।’