গান্ধীজির জীবনদর্শন ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১২:০৪

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা এমন এক পৃথিবীতে বাস করছি, যেখানে ঘৃণা ও গোঁড়ামি সন্ত্রাসবাদের দিকে পরিচালিত করছে এবং সহিংস চরমপন্থা মানবজাতিকে আগের চেয়ে আরও বেশি বিভক্ত করছে। বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা, দারিদ্র্য এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের মতো চ্যালেঞ্জকে কার্যকরভাবে মোকাবিলায় গান্ধীজির জীবনদর্শন এবং সব মানুষের প্রতি তার অটল বিশ্বাস আজও আমাদের একত্রিত করতে পারে।

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের ইকোসক চেম্বারে ভারতীয় মিশনে মহাত্মা গান্ধীর ১৫০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘নেতৃত্ব: সমসাময়িক বিশ্বে মহাত্মা গান্ধীর প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহাত্মা গান্ধীর মানবিক আদর্শ ও নীতি সব বিভাজনকে দূরে ঠেলে ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে। কারণ সন্ত্রাসবাদ ও সহিংসতা, ঘৃণা ও ধর্মান্ধতা মানবজাতিকে আগের চেয়ে অনেক বেশি বিভক্ত করছে। মহাত্মা গান্ধী একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক, একজন রাষ্ট্রনায়ক এবং একজন সাধু। তিনি তার সমস্ত জীবন মানবজাতির জন্য উৎসর্গ করেছেন। তিনি ছিলেন আশার আলো, অন্ধকারের আলো এবং হতাশার ত্রাণকর্তা।

তিনি বলেন, তার উজ্জ্বল এবং মন্ত্রমুগ্ধ নেতৃত্ব বিশ্বকে দেখিয়েছিল কোনো প্রকার সহিংসতা ছাড়া অহিংস উপায়ে পৃথিবী কাঁপানো সামাজিক এবং রাজনৈতিক পরিবর্তন আনা সম্ভব। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সামাজিক অবস্থান, মানুষে প্রতি তার নিঃস্বার্থ ভালোবাস, স্নেহ ও মমতা তাকে ‘মহাত্মা’ বানিয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানের দখলদার হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের ওপর গণহত্যা চালালে বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ২৬ মর্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে তাদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়েছিলেন। যখনই আমি বঙ্গবন্ধুর ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্ব, তার ত্যাগ এবং মানুষের পক্ষে সংগ্রামের দিকটি লক্ষ্য করেছি তখনই আমি তার মধ্যে মহাত্মা গান্ধীর সাথে অনেক বড় মিল খুঁজে পেয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। সম্পদের স্বল্পতা ও অন্যান্য গুরুতর চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও আমরা ভালোবাসা ও মমতা দেখিয়ে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যে গুণটি আমরা বঙ্গবন্ধু ও মহাত্মা গান্ধীর মধ্যে দেখেছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি হিসেন লং, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন, নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্দা আর্ডেন ছাড়াও অনুষ্ঠানে সাতটি দেশের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীরা বক্তব্য রাখেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত