নবজাতকের জন্মের খবর পেলেই গাছ নিয়ে হাজির হন ‘গাছবন্ধু’ গোপাল

প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৭:৩২

গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার ঘুড়িদহ ইউনিয়নের মথরপাড়া গ্রামের শিক্ষক ‘গাছবন্ধু’ গোপাল চন্দ্র বর্মণ (৩৩)। তিনি কোনো নবজাতকের জন্মের খবর পেলেই উপহার হিসেবে গাছ নিয়ে হাজির হন সেই বাড়িতে। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এপর্যন্ত ১০২৫টি শিশুর বাড়িতে গাছের চারা (কলম চারা) বিনামূল্যে রোপণ করেছেন তিনি।

এছাড়াও তিনি নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও ৩৮০জন ছাত্রছাত্রীকে বিনামূল্যে গাছ দিয়েছেন। পাশাপাশি প্রতিবছর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নানা অনুষ্ঠানেও তিনি গাছ বিতরণ করে আসছেন।

১০২৫টি শিশুর বাড়িতে গাছ লাগানো গোপাল বলেন, এখন নিজের এলাকায়, উপজেলায় গাছ রোপণ করছি, ভবিষ্যতে গোটা জেলায় তা ছড়িয়ে দিতে চাই। এজন্য এখন থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছি।

শিশু জন্মের সঙ্গে গাছ লাগানোর কী সম্পর্ক জানতে চাইলে তিনি বলেন, জনসংখ্যা অনুপাতে আমাদের দেশে গাছের সংখ্যা খুবই কম। শিশু জন্মের পর অক্সিজেনের চাহিদা বাড়ে, তাই গাছের সংখ্যা বাড়ানোসহ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা এবং ভবিষ্যতে শিশুটির আর্থিক সহায়তার কথা ভেবেই এধরনের উদ্যোগ নেওয়া।

গোপাল চন্দ্র বর্মণ জানান, কয়েকবছর আগে তিনি (গোপাল চন্দ্র) ব্যক্তি উদ্যোগে স্থানীয় একটি ক্লাবে প্রতিদিন একটি দৈনিক পত্রিকা কিনে দিতেন। এজন্য মাসিক ২৫০ টাকা ব্যয় হতো। কিছুদিন পর পত্রিকা সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। পরে সিদ্ধান্ত নেন, গাছ বিতরণ করবেন। সেই ভাবনা থেকেই ২০১৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি প্রথমবার এক নবজাতকের বাড়িতে গাছ লাগান।

ওইদিন এক ছেলে নবজাতকের জন্ম দেন সাঘাটার ঘুড়িদহ ইউনিয়নের উত্তর মথরপাড়া গ্রামের গৃহবধূ শিউলি বেগম। লোকমুখে শিশুটি জন্মের খবর পেয়ে তিনি একটি আম গাছ নিয়ে তাদের বাড়িতে যান। নিজের হাতে বাড়ির উঠোনে গর্ত তৈরি করেন, গর্তে গোবর সার দেন, তারপর সেখানে গাছ রোপণ করেন। গাছে পানিও দেন। এভাবেই শুরু হয় তার গাছ রোপণ কর্মকাণ্ডের শুভযাত্রা।

স্বাস্থ্যকর্মী শাহিনা বেগম বলেন, আমি সাঘাটা উপজেলার ঘুড়িদহ, কচুয়া ও কামালেরপাড়া ইউনিয়নে গর্ভবতী মায়েদের চিকিৎসাসেবা নিয়ে কাজ করি। সবসময়ই সন্তান জন্মের খবর দিয়ে গোপাল দাদাকে সহায়তার চেষ্টা করছি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত