সারাজীবন বিনা পয়সায় রোগী দেখতে চান ডাক্তার সামিল উদ্দীন

প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০১৯, ১৮:৩৫

ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন শান্ত প্রকৃতির। একা থাকা, ঝামেলায় না জড়ানো, গল্পের বই পড়া এইসবই ছিল তার আকর্ষণের বিন্দুতে। নিজের খুব ইচ্ছে ছিল বড়মাপের ইঞ্জিনিয়ার হবেন। ছোটবেলা থেকে সেই স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্ত বড় ভইয়ের রেজালট খারাপ হওয়ায় বাবা তাকে বললেন তিনি যেন ডাক্তার হন। কারণ বাবা এলাকার বড় নামকরা ডাক্তার।

কি আর করার নিজের স্বপ্নকে অনেকটা বিসর্জন দিয়েই ডাক্তারিতে মনোনিবেশ করলেন তিনি। হলেন একজন সফল ডাক্তার।

বলছি চাপাইনবাবঞ্জের কৃতি সন্তান ডাক্তার সামিল উদ্দীন আহমেদ শিমুলের কথা। তার আরো একটি পরিচয় আছে আর সেটি হলো তিনি একজন সাংসদ। ১৯৬৯ সালে জন্মগ্রহন করেন স্বপ দেখা এই মানুষটি। ছোটবেলা থেকেই নিয়েছিলেন ডাক্তার হবার বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ নিজের স্বপের থেকে বেশী স্বপ্ন দেখতেন বাবার স্বপ্নকে।

ক্লাস এইট থেকে যখন নাইনে উঠবেন তখন বাবা বলেছিল ফার্স্ট হতে আর বাবার কথামতো ফার্স্ট হয়ে যেমন পেয়েছিলেন বাই সাইকেল তেমনি এগিয়ে গিয়েছিলেন স্বপ্ন পূরণের একধাপ উপরে।

একদিকে যেমন ডাক্তার হবার নেশা মাথার মধ্যে অন্যদিকে ১৯৮০ সালে ক্লাস নাইনেই নির্বাচিত হয়েছিলেন ছাত্র সংসদের এজিএস হিসেবে। অল্প বয়সেই রাজনীতিতে আসায় দায়িত্ব যেন আরো বেড়ে গেল কাধে। তবে সাপোর্ট পেয়েছিলেন পরিবার থেকে। পরিবার বলতো বাবা যাই করো পড়াশুনা চালিয়ে যেতে হবে ঠিকঠাক।

বাবার কথার এক বিন্দুও নড়চড় করেননি তিনি। এর পর রাজশাহীর নিউ গভ: ডিগ্রী কলেজে ,রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মত বড় বড় প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের বড় পোষ্টে থেকে রাজনীতি করেন তিনি। ডা.শামিল উদ্দীন আহমেদ শিমুল শুধু ডাক্তারই নন তিনি একজন রাজনীতিবিদ। বর্তমানে তিনি চাপাইনবাবগঞ্জ ১ আসনের সংসদ সদস্য। তবে রাজনীতিবিদের থেকে ডাক্তার হিসেবেই এলাকায় তিনি বেশী জনপ্রিয়।

ডাক্তার হিসেবে তিনি যতটা না রুগী দেখেছেন রাজনীতির মাঠে এসে ,এমপি নির্বাচিত হবার পর তা আরো বেড়েছে। আগের সময়ের রুগী দেখা আর বর্তমানে রুগী দেখার মধ্যে অন্যরকম এক তৃপ্তি খুজে পান তিনি। রাজনীতি আর ডাক্তারি নাকি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ডা শিমুলের বড় ভালোবাসার জায়গা তিনি রুগী দেখেন বিনা পয়সায়।  টাকা নেয়ার মধ্যে খুজে পান না কোন সুখ। বরং অসুস্থ কেউ সুস্থ হলে ভালো লাগাটা যেন অনেক বেড়ে যায়। অনেক রুগী এ পর্যন্ত তিনি দেখেছেন ফ্রিতে। শুধু তাই নয় অনেক অসুস্থ মানুষকে চেষ্টাও করেছেন নিজে হাসপাতালে ভর্তি করে ট্রিটমেন্ট করাতে।

রাজনীতি আর ডাক্তারি দুটোই টানে তাকে। মনে রাখার মত ঘটনা বলতে গেলে ডা শিমুলের কাছে একটি ঘটনা আছে। একবার সংসদে অর্থমন্ত্রী  অসুস্থ হয়ে গেলে প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেন শিমুল মুহিত সাহেবকে একটু দেখোতো। পরে উনি অর্থমন্ত্রীর ট্রিটমেন্ট নিজেই করলেন। শুধু তাই নয় পরে একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নিজেই অর্থমন্ত্রীর পরিবারের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন ডাক্তার শিমুলকে। এ পাওয়া যেন অনন্য এক পাওয়া ডা শিমুলের কাছে।

যুদ্ধের বই পড়তে ভালোবাসেন এই মানুষটি আর ফুটবল খেলা তার পছন্দের খেলা। রাজনীতিবিদ হিসেবে সুন্দর একটি বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেন তিনি। আর ডাক্তার হিসেবে দেখতে চান  সবাই যেন সবসময় সুস্থ থাকে। এটিই স্বপ্ন তার।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত