‘গোলাগুলিতে’ শিশু ধর্ষণকারী দুই যুবক নিহত

প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০১৯, ১৭:০৯

ভোলা সদর উপজেলায় ঈদুল আজহার আগের রাত অর্থাৎ গত রবিবার রাতে প্রতিবেশির বাসায় মেহেদি লাগাতে গিয়ে ভাড়াটে আল আমিন (২৫) ও তাঁর সহযোগী মঞ্জুর আলম (৩০) নামে দুই যুবকের হাতে ১২ বছরের এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। পুলিশের সঙ্গে ‘গোলাগুলিতে’ এই ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত আসামী দু’জনই নিহত হয়েছেন।
 
গতকাল ১৩ আগস্ট (মঙ্গলবার) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার রাজাপুর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এলাকায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
 
নিহত আল আমিন সৈয়দ আহম্মেদের ছেলে ও সদর উপজেলার চরসামাইয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে বাসিন্দা। এবং মঞ্জুর আলম একই এলাকার কামাল মিস্ত্রির ছেলে।
 
আজ ১৪ আগস্ট (বুধবার) দুপুরে এ ঘটনা নিয়ে ভোলার পুলিশ সুপার সরকার মো. কায়সার তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে একটি বন্দুক ও গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।’
 
পুলিশের ভাষ্য, স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণ মামলার আসামিদের ধরতে গতকাল দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ রাজাপুরের নদীর তীরসংলগ্ন এলাকায় যায় পুলিশ। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। পরে ঘটনাস্থলে দুই যুবকের লাশ পাওয়া যায়। এলাকার লোকজন লাশ দুটি শনাক্ত করেন।
 
পুলিশ ও শিশুটির পরিবার জানায়, ঈদের আগের দিন গত রবিবার রাতে সদর উপজেলার একটি গ্রামে প্রতিবেশী এক নারীর কাছে হাতে মেহেদি লাগাতে যায় ১২ বছরের এই শিশুটি। প্রতিবেশি ঐ নারীর ভাড়াটে ছিলেন আল আমিন। আর তার সহযোগী ছিলেন মঞ্জুর। ঘটনার দিন তারা শিশুটির হাত-পা বেঁধে, মুখে কাপড় গুঁজে দিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন। শিশুটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ওই অবস্থায় ফেলে ধর্ষকরা পালিয়ে যান।
 
শিশুটির গোঙানির শব্দ পেয়ে প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পায়। পরে তার পরিবারকে খবর দেয়। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রথমে ভোলা সদর হাসপাতালে, পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শিশুটি স্থানীয় একটি স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
 
ভোলা সদর হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, ‘শিশুটির প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে গত সোমবার বিকেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।’
 
মঙ্গলবার দুপুরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিশুটি চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। তার আরও রক্তের প্রয়োজন। অভিভাবকদের রক্ত জোগাড় করতে বলা হয়েছে।
 
এ ঘটনায় সোমবার শিশুটির বাবা বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে ভোলা সদর মডেল থানায় মামলা করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি করা হয়। ঘটনার পর দুই আসামির সহযোগী জামাল নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত