২১ জুলাই ১৯৭৬: মুক্তিযুদ্ধে আহত সেক্টর কমান্ডার এর ফাঁসি

প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০১৯, ০২:০৮

মুক্তিযুদ্ধে আহত সেক্টর কমান্ডার

আবু তাহের ১৯৩৮ সালের ১৪ নভেম্বর আসামের বদরপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈত্রিক নিবাস নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার কাজলা গ্রামে। তিনি চট্টগ্রামের ফতেহাবাদ স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। তিনি ১৯৫৯ সালে সিলেট এম সি কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ এবং ১৯৬০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে এম.এ প্রথম পর্বে অধ্যয়ন করেন। কিছুকাল (১৯৫৯) তিনি চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার দূর্গাপুর হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেন।

১৯৬১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে অফিসার হিসাবে যোগদান করেন এবং ১৯৬২ সালে কমিশনপ্রাপ্ত হন। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে কাশ্মীর আর শিয়ালকোট সেক্টরে যুদ্ধ করেন তিনি। সে যুদ্ধে তিনি আহতও হন। একমাত্র বাঙালি অফিসার হিসাবে তাকে 'মেরুন প্যারাস্যুট উইং' নামক সম্মাননা প্রদান করা হয়৷

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অফিসার হিসাবে তাহের কমান্ডো প্রশিক্ষণ লাভ করেন ও পরে সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষক হিসাবে কাজ করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাহের সম্মুখ সমরে আহত হন এবং এক পা হারান। কর্নেল তাহেরের সব ভাইবোন মুক্তিযুদ্ধে তার নেতৃত্বে ১১ নং সেক্টরে যৌথভাবে যুদ্ধ করেছেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর কতিপয় সদস্য কর্তৃক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যাকান্ডের পর সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থান ও পাল্টা অভ্যুত্থানের কারণে সাধারণ সৈনিকদের মধ্যে বিক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এ প্রেক্ষাপটে ৭ নভেম্বর (১৯৭৫) আবু তাহের জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সহযোগিতায় সিপাহি-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন। ১৯৭৫ সালের ২৪ নভেম্বর কর্নেল তাহের গ্রেফতার হন। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক অবস্থায় কারাগারের অভ্যন্তরে তাহেরসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে সামরিক ট্রাইব্যুনালে বিচার হয় এবং বিচারে তাকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করা হয়। ১৯৭৬ সালের ২১ জুলাই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসিতে তার মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়।

২০১১ সালের ২২ মার্চ বাংলাদেশের মহামান্য হাইকোর্ট সামরিক আদালতে কর্নেল তাহেরের ফাঁসির রায়কে অবৈধ ঘোষণা করে।

তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত