মিন্নির পক্ষে আদালতে লড়তে চান ওসি মোয়াজ্জেমের আইনজীবী

প্রকাশ : ১৯ জুলাই ২০১৯, ১২:৩১

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির পক্ষে মামলা পরিচালনার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ফেনীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত হত্যায় গ্রেপ্তার সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ। তিনি মিন্নিকে বিনামূল্যে আইনি সহায়তা দিতে চান বলে জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) রিমান্ড শুনানির সময় আদালতে মিন্নির পক্ষে কোনো আইনজীবী দাঁড়াননি। অভিযোগ রয়েছে, প্রভাবশালীদের চাপে বরগুনার কোনো আইনজীবী মামলা পরিচালনা করার সাহস পাচ্ছেন না।

এদিকে মিন্নির পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে দাঁড়াননি এ খবর শুনে মিন্নির পক্ষে মামলা পরিচালনার আগ্রহ প্রকাশ করেন ফারুক আহমেদ।

তিনি বলেন, মিন্নির পরিবার চাইলে তার পক্ষে ফারুক অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস দাঁড়াতে চায়। ফারুক অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস সব সময় নির্যাতিত, অসহায় ও অসচ্ছল পরিবারের পক্ষে ন্যায়বিচারের জন্য মামলা পরিচালনা করে থাকে।

তিনি জানান, একজন আইনজীবী ইব্রাহিম খলিল মিন্নির বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি আইনি সহায়তা নিতে সহমত প্রকাশ করেছেন। সে অনুযায়ী ফারুক অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস আগামী মঙ্গলবার মিন্নিকে রিমান্ড থেকে আদালতে ফেরার দিন বরগুনার আদালতে গিয়ে তাদের আইনি সহায়তা দেবে।

তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা ঢাকা থেকে মিন্নির জন্য মামলা পরিচালনা করব। এ জন্য মিন্নির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। আমরা তাকে লিগ্যাল এইড (বিনা পয়সায় মামলা পরিচালনা) দেব।

বুধবার বিকালে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে হাজির করা হয় রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী তার স্ত্রী মিন্নিকে। এদিন আদালতে মিন্নির পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিল না।

এ বিষয়ে মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, আমার মেয়ের পক্ষে অ্যাডভোকেট জিয়াউদ্দিন, অ্যাডভোকেট গোলাম সরোয়ার নাসির ও অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা কাদেরের দাঁড়ানোর কথা ছিল। আমার মনে হয় প্রতিপক্ষের ভয়ে তারা আমার মেয়ের পক্ষে দাঁড়াননি।

উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। এ সময় বরগুনা সরকারি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রী আয়েশা আক্তার মিন্নি তার স্বামীকে রক্ষার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালান। কিন্তু সন্ত্রাসীরা তাকে (রিফাত) উপর্যুপরি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়। 

পরে ওইদিন বিকেল ৩টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে রিফাত শরীফের মৃত্যু হয়। জনবহুল এলাকায় এমন নৃশংস হামলার ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে দেশেজুড়ে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভের ঝড় ওঠে।

রিফাত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত মিন্নিসহ ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ২ জুলাই ভোরে মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। এখন পর্যন্ত ১০ আসামি আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত