জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করতে হবে: ডিসিদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ : ১৪ জুলাই ২০১৯, ১৩:৩৭

জেলা প্রশাসকদের তৃণমূল পর্যায়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে সার্বিক উন্নয়নে জেলা প্রশাসকরা গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। জেলার ডিসিরা স্বপ্রণোদিত হয়ে নানা সামাজিক উন্নয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেন। যার সুফল সাধারণ জনগণ পেতে পারে।

রবিবার (১৪ জুলাই) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সারাদেশে জেলাভিত্তিক উন্নয়নের বাজেট প্রণয়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। জেলার ভৌগলিক অবস্থান, আয়তন, জনসংখ্যা ও চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে আগামীতে জেলাভিত্তিক উন্নয়ন বাজেট প্রণয়ন করা হবে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে যেন মানুষের জীবনমান উন্নত হয়, দারিদ্র্যসীমা থেকে তারা উঠে আসতে পারে, সবার ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, জীবনযাত্রা আরও উন্নত হয়, গ্রাম থেকে শহরে আসার প্রবণতাও যেন কমে যায়। সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমাদের সব পরিকল্পনা। এক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ে থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন আপনারা।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে যেন মানুষের জীবনমান উন্নত হয়, দারিদ্র্যসীমা থেকে তারা উঠে আসতে পারে, সবার ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, জীবনযাত্রা আরও উন্নত হয়, গ্রাম থেকে শহরে আসার প্রবণতাও যেন কমে যায়। সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমাদের সব পরিকল্পনা।

আমাদের একটা মাস্টারপ্ল্যান থাকা দরকার। জেলা উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত মাস্টারপ্ল্যান উন্নয়ন করে আমাদের যেমন ফসলের ক্ষেত রক্ষা করতে হবে, বন রক্ষা করতে হবে। আবার রাস্তাঘাটও করতে হবে মানুষের চলাফেরার জন্য।’

অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসকদের ৩০টি নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসাইন, শেরপুর জেলা প্রশাসক আনারকলি মাহবুব, টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাগুলো নিম্নরূপ:

  • বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে বছরব্যাপী মুজিববর্ষ পালন করতে হবে।
  • সমাজ থেকে দারিদ্র্য দূরীকরণে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে, যাতে দারিদ্র্যের হার ২১ শতাংশের নিচে নেমে আসে।
  • মাদক নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নিতে হবে।
  • জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে হবে।
  • মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে হবে।
  • অবকাঠামোর উন্নয়ন করতে হবে। এটা করতে গিয়ে যেখানে সেখানে যাতে সেতু ও রাস্তা নির্মাণ করা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  •  তথ্যপ্রযুক্তির যোগাযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
  • জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে।
  • নারী শিক্ষার হার বাড়াতে হবে।
  • ভূমি প্রশাসনের স্বচ্ছতা আনতে এটিকে ডিজিটালাইজড করতে হবে।
  • কৃষি উৎপাদন বাড়াতে হবে।
  • ভেজাল খাদ্য রোধ করতে হবে।
  • দরিদ্রদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। ডাক্তারদের উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে থাকতে হবে। না থাকলে চাকরি থেকে বের করে দিতে হবে।
  • পরিবেশ রক্ষায় জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।
  • দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় নীতিমালা-২০১২ বাস্তবায়ন করতে উদ্যোগ নিতে হবে।
  • আদালতের মামলাজট কমাতে গ্রাম্য সালিশ-বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে বিরোধ মীমাংসার উদ্যোগ নিতে হবে।
  • জেলার কমিটিগুলোকে সক্রিয় করতে হবে।
  • বিভিন্ন সেবাসপ্তাহ যথাযথ মর্যাদায় পালন করতে হবে।
  • শিল্পের পরিবেশ বজায় রাখতে পরিবেশ উন্নয়ন করতে হবে, পাশাপাশি চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে।
  • বাজার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। কৃত্রিম সংকট ঠেকাতে হবে।
  • নারী নির্যাতন, সহিংসতা, নানা ধরনের ইভটিজিং বন্ধ করতে হবে।
  • নারীর প্রতি সহিংসতা ঠেকাতে হবে।
  • শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিতে উদ্যোগ নিতে হবে।
  • প্রতিবন্ধীদের সেবা নিশ্চিত করতে নানামুখী উদ্যোগ নিতে হবে।
  • পার্বত্য জেলার সংস্কৃতি বজায় রেখে উন্নয়ন করতে হবে।
  • গ্রাম পর্যায় থেকে সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নিতে হবে।
  • জেলার আকার বিবেচনায় রেখে উন্নয়নের পরিকল্পনা নিতে হবে।
  • স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে হবে।
  • চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। স্কুল কলেজের মাঠ নয়, একটু দূরে হলেও মিনি স্টেডিয়াম তৈরির জন্য জায়গা বের করতে হবে। মডেল মসজিদ নির্মাণ ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে জঙ্গিবাদ গড়ে না ওঠে।
  • সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়নের মধ্যে দিয়ে গৃহহীন মানুষদের পুনর্বাসনের মাধ্যমে নিজ গৃহে ফিরিয়ে আনতে হবে।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত