গ্যাস ৬১ টাকায় কিনে ৯ টাকায় বিক্রি করছি: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ : ০৮ জুলাই ২০১৯, ১৮:০১

দেশের অর্থনীতির উন্নতি চাইলে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি মেনে নিতে হবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যে দামে সরকার জ্বালানি ক্রয় করা হয় সে দামে বিক্রি করা হলে দেশে জ্বালানিমূল্য আরো অনেক বেড়ে যাবে।

সোমবার (৮ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ১ শতাংশ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। এর কারণ আমরা এনার্জি ক্ষেত্রে যথেষ্ট মনোযোগ দিয়েছি। বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পেরেছি এবং গ্যাস আমাদের আমদানি করতে হচ্ছে।

যারা আন্দোলন করছে তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ৬১ টাকা ১২ পয়সা করে এলএনজি আমদানি করে ৯ দশমিক ৮০ টাকায় দিচ্ছি। এই দাম বাড়ানোর পরও আমাদের বছরে ১০ হাজার কোটি টাকার ওপরে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। তাহলে আমদানি যখন করেছি আমরা একটা কাজ করি, যে দামে কিনব সেই দামে বিক্রি করব। আমরা ৬১ টাকা করে নিবো।

গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দাম যেটুকু বাড়ানো হয়েছে, সেটুকু যদি বাড়ানো না হয় তাহলে আমাদের সামনে দুটি পথ আছে- হয় আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি না বাড়ে, সেজন্য এলএনজি আমদানি কমিয়ে দিয়ে এনার্জির ক্ষেত্র সংকুচিত করে ফেলব। অর্থনীতির উন্নতি হবে না। যদি উন্নতি চান এটাকে মেনে নিতে হবে। শুধু আমরা না গ্যাস আমদানিকারক দেশও এটা মেনে নেয়।

২০০৫ সালের স্বাক্ষরের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৪-০৫ সালে মিয়ানমারের যে গ্যাস, সেই গ্যাসে ভারত, মিয়ানমার, জাপান, চীন বিনিয়োগ করেছিল। ভারতে ওই গ্যাস নিতে চেয়েছিল বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে পাইপ লাইনে। কিন্তু খালেদা জিয়ার সরকার ওই পাইপ লাইনের গ্যাসটা নিতে দেয়নি। সেখানে যদি আমি থাকতাম তাহলে আমি কি করতাম- আমি পাইপ লাইনে গ্যাস নিতে দিতাম এবং আমার ভাগটাও রেখে দিতাম। আমাকে দিয়ে তারপর নিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মিয়ানমার থেকে পাইপ লাইনে গ্যাস আনতে পারতাম। সেই গ্যাস যদি এনে অর্থনীতির কাজে লাগাতে পারতাম তাহলে আমাকে এখন এলএনজি আমদানি না করলেও চলতো। সেই গ্যাসটা নিতে পারিনি। পুরাটা চীন কিনে নিচ্ছে। কিন্তু আমার তো আর নেয়ার কোন উপায় নাই।

উল্লেখ্য, চীন সফরকালে প্রধানমন্ত্রী ২ জুলাই দালিয়ানে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দেন। ৪ ও ৫ জুলাই বেইজিংয়ে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং ও প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের সাথে বৈঠক করেন। সেই সাথে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) আন্তর্জাতিক বিষয়ক মন্ত্রী সং তাও প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেন।

চীনের এসব শীর্ষ নেতা মিয়ানমার সরকার ও দেশটির নেতাদের বুঝিয়ে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশকে সাহায্য করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে বিদ্যুৎ, পানিসম্পদ, সংস্কৃতি ও পর্যটন খাতে সহযোগিতা জোরদারের পাশাপাশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আড়াই হাজার মেট্রিক টন চাল সরবরাহে বাংলাদেশ ও চীন নয়টি চুক্তি সই করে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং বেইজিংয়ে গ্রেট হল অব দ্য পিপলে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে তাদের উপস্থিতিতে সাক্ষরিত চুক্তিগুলোর মধ্যে দুটি ঋণচুক্তি হয়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত