এলিয়েন মডেলের গাড়ি ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে উবার চালক আরমানকে হত্যা

প্রকাশ : ৩০ জুন ২০১৯, ১৩:৫৬

সাহস ডেস্ক

উবারের চালক আরমান (৪০) হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা উত্তর বিভাগ। তাদের টার্গেট ছিল একটি টয়োটা এলিয়েন মডেলের গাড়ি ছিনতাই করা। টার্গেট হিসেবে বেছে নিয়েছিল রাইড শেয়ারিং কোম্পানি উবারের গাড়ি।

পরিকল্পনা অনুযায়ী এলিয়েন গাড়ি পেতে উবারের রাইড রিকয়েস্টে এক-দুই বার নয়, পাঁচ বারের চেষ্টা করে পেয়ে যায় কাঙ্খিত এলিয়েন মডেলের গাড়ি। পরে উত্তরা ১৪ নং সেক্টরে পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৪ জুন হত্যা করা হয় উবার চালক আরমানকে।

রবিবার (৩০ জুন) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোঃ আবদুল বাতেন বিপিএম, পিপিএম।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী সিজান (২৪), শরিফ (১৯) ও সজিব (২০)। ঢাকা ও বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ২৯ জুন ২০১৯ তারিখে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তী সময়ে হত্যাকারীদের সাথে নিয়ে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দুইটি সুইচ গিয়ার চাকু হত্যাকান্ডের ঘটনাস্থলের নিকটবর্তী হতে উদ্ধার করা হয়।

ডিবি প্রধান জানান, ১৩ জুন রাত অনুমান ২৩.৫৯টা হতে ১৪ জুন রাত ০০.৫০টার মধ্যে যেকোন সময় উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ১৪ নম্বর সেক্টরস্থ ১৬ নং রোডের ৫২ নং বাড়ি সামনে গাড়ির মধ্যে চালক আরমানকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। হত্যাকান্ডের পর গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের উত্তরা জোনাল টিম ছায়া তদন্তে নামে। তদন্তের এক পর্যায়ে জানা যায়, উবার চালক আরমান হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী সিজান এবং তার সঙ্গে ছিল শরিফ ও সজিব। মামলা তদন্তের তথ্য ও প্রাপ্ত গোয়েন্দা তথ্য সমন্বয় করে গোয়েন্দা উত্তর বিভাগ ঢাকা ও বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তী সময়ে হত্যাকারীদের সাথে নিয়ে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দুইটি সুইচ গিয়ার চাকু হত্যাকান্ডের ঘটনাস্থলের নিকটবর্তী হতে উদ্ধার করা হয়। মামলাটি বর্তমানে গোয়েন্দা উত্তর বিভাগে তদন্তনাধীন আছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানায়, গ্রেপ্তারকৃত সিজান আগেও গাড়ি ছিনতাই করেছে। একজন লোক ৮ লক্ষ টাকা দিয়ে এলিয়েন মডেলের গাড়ি কিনতে সিজানের সাথে যোগাযোগ করে। এলিয়েন গাড়ি ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে সিজান রামপুরায় অবস্থিত তার বাসার ছাদে শরিফকে নিয়ে পরিকল্পনা সাজায়। এক পর্যায়ে তাদের পরিকল্পনায় সজীবকে যুক্ত করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৩ জুন নিউমার্কেট থেকে দুইটি সুইচ গিয়ার চাকু কেনে তারা। রাত অনুমান ১১টার দিকে সিজান উবারের মাধ্যমে গাড়ি কল করলে গাড়িটি এলিয়েন না হওয়ায় কল বাতিল করে দেয়। এভাবে পঞ্চম চেষ্টায় পেয়ে যায় উবার চালক আরমানের এলিয়েন মডেলের গাড়িটি। গাড়িতে চরে তারা উত্তরার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ১৪ নম্বর সেক্টরস্থ ১৬ নং রোডে নিরিবিলি স্থানে গাড়িটি থামাতে বলে। গাড়ির ভাড়া পরিশোধ না করে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে অনুমান রাত ১২.৩৭টা দিকে চারদিকে নিরাপদ মনে করে সিজানের ইশারায় চালক আরমানের পেছন ছিটে বসা শরিফ আরমানের মাথার চুল পিছনের দিকে টেনে ধরে চাকু দিয়ে গলা কেটে গাড়ি থেকে নেমে যায়। পরবর্তী সময়ে আশপাশে পরিবেশ অনুকুল না হওয়ায় আরমানের মৃত দেহসহ গাড়িটি রেখে তারা পালিয়ে যায়।

এলিয়েন মডেলের প্রাইভেটকার ছিনতাই করার উদ্দেশ্যেই তারা উবার চালক আরমানকে গলা কেটে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত