পুলিশ কর্মকর্তার বাড়িতেও হামলা চালিয়েছিলেন রিফাত ফরাজী

প্রকাশ | ২৮ জুন ২০১৯, ১২:০২

অনলাইন ডেস্ক

বরগুনা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের ধানসিঁড়ি রোডের মো. দুলাল ফরাজীর বড় ছেলে রিফাত ফরাজী (২৫)। এর আগে এক পুলিশ কর্মকর্তার বাড়িতেও হামলা চালিয়ে কোপাকুপির ঘটনা ঘটিয়েছেন তিনি।

ঝালকাঠি সদর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেন বলেন, এই রিফাত ফরাজী প্রায় দুই বছর আগে আমার বাসার সামনে বখাটেদের নিয়ে আড্ডা দিতো। এ নিয়ে আমার স্ত্রী প্রতিবাদ করায় আমার বাসায় হামলা চালায় রিফাত ফরাজী। প্রতিনিয়ত নেশা করতো এবং তার সঙ্গে অনেক প্রভাবশালীর ছেলেরা থাকতো। আমার বাসায়ও চাপাতি নিয়ে হামলা চালিয়েছিল রিফাত ফরাজী। ওই সময় আমার ঘরের আসবাবপত্র কুপিয়ে তছনছ করে হুমকি দিয়ে যায়। পরে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু কিছুদিন পরই ছাড়া পেয়ে যায় রিফাত ফরাজী।

রিফাতের প্রতিবেশীরা জানান, মাদক ব্যবসা, মাদক সেবন ও ছিনতাইসহ নানা অপকর্মে যুক্ত রিফাত ফরাজী। এ কারণে স্থানীয়দের কাছে একটি আতঙ্কের নাম রিফাত ফরাজী। রিফাতের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন, এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়। প্রতিবেশী ও স্থানীয়দের ওপর হামলা, মারধর রিফাতের কাছে নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। এসব কারণে কয়েকবার গ্রেফতার হলেও অজ্ঞাত এক কারণে খুব স্বল্প সময়েই মুক্তি পান তিনি। ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই সন্ধ্যায় তরিকুল ইসলাম (২১) নামে এক প্রতিবেশীকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করেন রিফাত ফরাজী।

একই বছর রিফাত বরগুনার ডিকেপি রোডের বাসার ছাত্র মেসে গিয়ে ধারালো অস্ত্রের মুখে বাসায় থাকা সব ছাত্রদের জিম্মি করে, তাদের ১৪টি মোবাইল ছিনতাই করে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হলে পুলিশ রিফাতের বাবা দুলাল ফরাজীকে আটক করে মোবাইলগুলো উদ্ধার করেন।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিকেপি রোডের এক বাসিন্দা বলেন, ডিকেপি রোডের আমাদের ভাড়া দেয়া বরগুনা পলিট্যাকনিক ইনিস্টিটিউটের মেসে গিয়ে ধারালো অস্ত্রের মুখে ১৪টি মোবাইল ছিনতাই করেন রিফাত ফরাজী। এ ঘটনা জানার পর আমি বরগুনা সদর থানায় গিয়ে অভিযোগ করায় রিফাত ফরাজীর বাবা দুলাল ফরাজীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। পরে তিনি রিফাতের কাছ থেকে ছিনতাই করা ১৪টি মোবাইলের মধ্যে ১১টি উদ্ধার করেন। আর বাকি তিনটি মোবাইল উদ্ধার করতে না পেরে নতুন মোবাইল কিনে দিয়ে থানা থেকে মুক্তি পান।

বরগুনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবীর হোসেন মাহমুদ বলেন, রিফাত শরীফ নিহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

রিফাত ফরাজীর অপরাধের বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি আবীর হোসেন মাহমুদ বলেন, আমি এখানে যোগ দিয়েছি মাত্র সাত মাস হয়েছে। আমি যোগ দেয়ার পর এমন কিছু ঘটেনি। যেহেতু আমি আসার আগে এসব ঘটনা ঘটেছে সেগুলোর প্রমাণ খুঁজে বের করে রিফাত ফরাজীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।