মসজিদে ঘোষণা দিয়েও ভোটারদের আনা যায় না: মেনন

প্রকাশ : ১৯ জুন ২০১৯, ১৮:০৩

সাহস ডেস্ক

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলের নেতা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে জনগণ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। উপজেলা নির্বাচনেই তার প্রমাণ পাওয়া যায়। মসজিদে মসজিদে ঘোষণা দিয়েও ভোটারদের আনা যায় না। এটা কেবল নির্বাচনের জন্য নয়, গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক।

বুধবার (১৯ জুন) জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থ বছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

রাশেদ খান মেনন বলেন, রোগ এখন উপজেলা নির্বাচন পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। পাঁচ দফা উপজেলা নির্বাচনে তার দল, এমনকি আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীদের অভিজ্ঞতা করুণ। নির্বাচন কমিশন, প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বলেও কোনও লাভ হচ্ছে না। বরং তাদের যোগসাজশ রয়েছে। এর ফলে নির্বাচন ও সামগ্রিক নির্বাচনি ব্যবস্থা সম্পর্কে জনমনে অনাস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ভোট দেওয়ার ব্যাপারে জনগণ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ১৪ দলের শরিকদের নিজ পায়ে দাঁড়াতে বলেছেন। কিন্তু গণতান্ত্রিক স্পেস না থাকলে কেউ সংগঠন, আন্দোলন, ভোট নিয়ে এগুতে পারে না।

তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন আর এক টাকাও ঋণখেলাপি হবে না। অথচ ওই প্রজ্ঞাপনের এক মাসের মধ্যে ঋণখেলাপির পরিমাণ ১৭ হাজার কোটি টাকা বেড়ে ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে যা এই বাজেটের পরিমাণের এক পঞ্চমাংশ। আর ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি কীভাবে নির্দিষ্ট হবে তা জানা নেই।

তিনি বলেন, কালো টাকা দিয়ে জমি ফ্ল্যাট কেনার বিশেষ সুবিধা দান, বিপুল পরিমাণ পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার কোনও প্রক্রিয়া না থাকা কেবল ধনীদের জন্য। আর দেশের বিকাশমান মধ্যবিত্ত এক্ষেত্রে বিশেষ চাপের মধ্যে থাকবে।

মেনন বলেন, জিয়া-এরশাদ প্রবর্তিত কালো টাকা সাদা করার বিধান ’৯০ পরবর্তীতে কিছুদিনের জন্য বন্ধ থাকলেও, পরে আবার তা চালু হয় শাসকশ্রেণির প্রয়োজনেই। বেগম খালেদা জিয়া, সাইফুর রহমানের কালো টাকা সাদা করার কথা তো আমরা সবাই জানি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন টাকা যাতে পাচার না হয় তার জন্য বিনিয়োগে স্ট্রিমিং করতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ যাবত এ ধরনের ব্যবস্থা থেকে বিশেষ সাফল্য পাওয়া যায়নি। এতে ফ্ল্যাট-জমির দাম মধ্যবিত্তের আওতার বাইরে চলে যাবে। আর অনৈতিকতাই উৎসাহিত হবে।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি আক্ষেপ করে বলেন, সাইবার সিকিউরিটি আইনে সাংবাদিকসহ যে কাউকে গ্রেফতার করা হয়, কিন্তু এদের করা হয় না। জামায়াত রাজনৈতিকভাবে পরাজিত, বিচ্ছিন্ন, বিভক্ত। কিন্তু এদের মাধ্যমেই সমাজজুড়ে সাম্প্রদায়িক মানসিকতার বিস্তার ও একটি উত্তেজনাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করার বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়ালে দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ও অশান্তি সৃষ্টি হবে। বঙ্গবন্ধু এ কারণেই ধর্মকে রাজনীতি থেকে বিযুক্ত করে সংবিধানের বিধান করেছিলেন। আমরা সেই জায়গায় থাকতে পারিনি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত