মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে জাতিসংঘ

প্রকাশ : ১৭ জুন ২০১৯, ১৫:৫৯

সাহস ডেস্ক

রাখাইন সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমবারের মতো মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে জাতিসংঘ।

দ্য গার্ডিয়ানের এক অনুসন্ধান থেকে জানা গেছে, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সরকারের জাতিবিদ্বেষী নীতির কারণে ত্রাণ সহায়তা প্রত্যাহারের হুমকি দিয়েছে সংস্থাটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ বাস্ত্যুচ্যুতির শিকার হয়ে যে রোহিঙ্গারা এখনো রাখাইনের শরণার্থী শিবিরে (ইন্টারন্যালি ডিসপ্লেসড পার্সনস-আইডিপি ক্যাম্প) থেকে গেছে, তাদের মৌলিক মানবাধিকার ও চলাফেরার স্বাধীনতা নিশ্চিত না হলে ত্রাণ সহায়তা বন্ধ করে দেওয়া হবে।

২০১২ সালে রাখাইনে সহিংসতা শুরুর পর বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়া জনগোষ্ঠীদের জন্য স্থাপন করা হয় আইডিপি ক্যাম্প। তখন থেকেই এই ক্যাম্পে সহায়তা দিয়ে আসছে জাতিসংঘ। রোহিঙ্গা ও কামান জনগোষ্ঠীর প্রায় এক লাখ ২৮ হাজার সদস্য এসব ক্যাম্পে বসবাস করে। তবে তাদের চলাফেরায় কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে রেখেছে মিয়ানমার সরকার।

২০১৭ সালে রোহিঙ্গা বিরোধী নতুন অভিযান জোরালো করার পাশাপাশি এসব ক্যাম্প বন্ধ শুরুর অঙ্গীকার করে মিয়ানমার সরকার। তবে সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের কোনও পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে জাতিসংঘ-বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় প্রত্যাবাসন চুক্তি হয়েছে। তবে মুখে প্রত্যাবাসনের কথা বললেও মিয়ানমার শুরু থেকেই রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে কার্যকর কোনও উদ্যোগ নেয়নি। একদিকে তারা বুলডোজারে মানবতাবিরোধী অপরাধের আলামত নষ্ট করেছে, চলমান রেখেছে রোহিঙ্গাদের ভূমিতে ‘আদর্শ বৌদ্ধ গ্রাম’ নির্মাণের প্রক্রিয়া; অন্যদিকে তারা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ভান করে গেছে।

ত্রাণ বন্ধের সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করে মিয়ানমারে কর্মরত জাতিসংঘের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ক্যাম্প বা তার আশেপাশে স্থায়ী বাড়িঘর নির্মাণে সরকারি পরিকল্পনায় এটা স্পষ্ট যে জাতিবিদ্বেষী বিচ্ছিন্নতা স্থায়ী হবে।

গার্ডিয়ানের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, আইডিপি ক্যাম্প বন্ধের কাজ আন্তর্জাতিক মানে আনতে জাতিসংঘ বেশ কয়েক মাস ধরেই মিয়ানমারকে আহ্বান জানিয়ে আসছে। ধারণা করা হয় এসব নিয়ে আলোচনা করতে চাইলে বেশ কিছু ক্ষেত্রে ওস্টবির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেও অস্বীকার করেছে মিয়ানমার সরকার। 

তবে মিয়ানমারের সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপমন্ত্রী সোয়ে অং দাবি করেছেন, ওস্টবির চিঠিকে জাতিসংঘের সহায়তা প্রত্যাহারের হুমকি হিসেবে দেখছেন না তারা। তিনি বলেন, জাতিসংঘের সংস্থা এবং আমাদের মন্ত্রণালয় নিবিড় যোগাযোগ রাখছে আর মানবিক সহায়তা, শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের জন্য আমরা খোলামেলাভাবে এবং বারবার আলোচনা করছি।

সাহস২৪.কম/ইতু

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত