চলন্তবাসে গৃহবধূকে গণধর্ষণ মামলায় ৪ আসামির যাবজ্জীবন

প্রকাশ : ২২ মে ২০১৯, ১৮:৫৭

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে চলন্তবাসে এক গৃহবধূকে গণধর্ষণ মামলায় চার আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে। সেই সাথে প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত। 

টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক বেগম খালেদা ইয়াসমিন বুধবার দুপুরে তিন আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। মামলার এক আসামি পলাতক রয়েছে।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো বাস চালক হাবিবুর রহমান নয়ন (২৮), হেলপার মোঃ খালেক ভুট্টো (২৩), আশরাফুল (২৬), সুপারভাইজার রেজাউল করিম জুয়েল (৩৮)। এদের মধ্যে রেজাউল করিম জুয়েল পলাতক রয়েছে।

রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিশেষ পিপি নাসিমুল আক্তার নাসিম। তাকে সহায়তা করেন মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিশেষ পিপি নাসিমুল আক্তার নাসিম বলেন, এ রায়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। এছাড়াও বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যেভাবে গণধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে, এ রায় তা রুখতে অনেকটাই ভূমিকা রাখবে।

আর মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার টাঙ্গাইল শাখার সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ বলেন এই রায়ের মধ্য দিয়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হলো। এরকম রায় বাস্তবায়িত হলে দেশে ধর্ষণের ঘটনা কমে আসবে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, গাজীপুরের চন্দ্রা এলাকায় পোশাক তৈরির কারখানায় কর্মরত এক নারী শ্রমিক খালার বাড়ি ধনবাড়ীতে বেড়াতে যান। ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল কালিয়াকৈরের মৌচাকে কর্মরত এক গার্মেন্টস কর্মী গৃহবধূ টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে ভোর পাঁচটার দিকে ‘বিনিময় পরিবহনের’ একটি বাসে রওনা দেয়। এসময় বাসে যাত্রী না থাকার সুযোগে বাসটি কিছুদূর যাওয়ার পর চালকের সহকারী জানালা দরজা বন্ধ করে দেন। 

পরে গাড়ির চালক হাবিবুর রহমান নয়ন তাকে ধর্ষণ করে। পালাক্রমে বাসের সহকারীরা ধর্ষণ করে। বাসটি ঢাকা না গিয়ে টাঙ্গাইল ময়মনসিংহ সড়কের একটি ফাঁকা জায়গায় ধর্ষিতাকে নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ভিকটিম স্বামীকে বিস্তারিত জানালে তার স্বামী তাকে টাঙ্গাইল এনে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। 

পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত বাসের চালক ও সহকারীদের ঐদিনই গ্রেপ্তার করে। স্বামী বখতিয়ার বাদী হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় নয় জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে। 

পুলিশ তদন্ত শেষে চার জনকে আসামি করে চার্জশিট প্রদান করে এবং ছয়জনকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদান করে। গ্রেপ্তারকৃত তিন আসামি আদালতে স্বীকাররোক্তি জবানবন্দী প্রদান করে।

সাহস২৪.কম/রিয়াজ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত