ছাতকে নৌপথে চাঁদাবাজি নিয়ে দু’পক্ষের বন্দুকযুদ্ধে নিহত ১, আহত ৫০

প্রকাশ : ১৬ মে ২০১৯, ১২:৫০

নুর উদ্দিন

সুনামগঞ্জের শিল্পনগরী ছাতকে সুরমা নদীতে চাঁদাবাজি নিয়ে সহোদর দুই আওয়ামী লীগ নেতার সমর্থকদের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও বন্দুকযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়ে ১ জন নিহতের ঘটনা ঘটেছে।

গুলিবিদ্ধ হন ছাতক থানার ওসি মোস্তফা কামাল, ওসি তদন্ত আমিনুল ইসলাম, এসআই সৈয়দ আব্দুল মান্নান, কং ফাহিম, কং সাকিরসহ ৮ পুলিশ সদস্য। ওসি মোস্তফা কামালসহ আহত ৩ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে ছাতক পৌর শহরে এ ঘটনা ঘটে। ছাতক পৌর শ্রমিক লীগ সদস্য সাহাব উদ্দিন (৪৫) নামের একজন বুকে গুলিবিদ্ধ হন। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১২টার দিকে মারা যান। শাহাব উদ্দিন বাগবাড়ি এলাকার আব্দুস সোবহানের পুত্র। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ২১৫ রাউন্ড টিয়ারশেল ও ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়। 

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ছাতকে সুরমা নদীতে বালু-পাথর বাহী নৌকা থেকে চাঁদা উত্তোলন নিয়ে ছাতক পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আবুল কালাম চৌধুরী ও তার আপন সহোদর জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক শামীম আহমদ চৌধুরীর সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কয়েক দিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এর জের ধরে দু'পক্ষের মধ্যে প্রায় আধাঘন্টা ব্যাপী ইট-পাটকেলের ছুড়া-ছুড়িসহ শতাধিক রাউন্ড গুলিবিনিময় হয়েছে। এসময় ছাতক হাই স্কুল সংলগ্ন এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষের খবর পেয়ে ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফা কামাল ঘটনাস্থলে গিয়ে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে নিজেই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

ওসি মোস্তফা কামালসহ আহত ৩ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের শাহাব উদ্দিন, সেলিম চৌধুরী, কহিন চৌধুরী, শহিদুল ইসলাম,কামাল চৌধুরী, ফরহাদ চৌধুরী, আবুল খয়ের টুটুল, সোহাগ দাস, সাজু, শাওন, সানী, গিয়াস মিয়াসহ আহত ২৫ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং ছাতক হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জামাল চৌধুরী, কামাল চৌধুরী, ইলিয়াছ চৌধুরী, আশরাফ চৌধুরী, পল্টু দাস, দিলোয়ার হোসেন, শামীম আহমদ, গিয়াস মিয়া, রহিম আলীসহ ২৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

ছাতক থানার ওসি মোস্তফা কামাল জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১৬৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও ৫২ রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করেছে।

এএসপি সার্কেল ছাতক জোন বিল্লাল হোসেন জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আটক ২৮ জনের মধ্যে যারা ঘটনার সাথে জড়িত নয় যাচাই-বাচাই করে তাদের ছেড়ে দেয়া হবে। দু’পক্ষের কেউ এখনো থানায় মামলা দায়ের করেনি। পুলিশ আহতের ঘটনায় ৯৫ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় পুলিশ এসল্ট মামলা রুজু করা হয়েছে ।

সাহস২৪.কম/রিয়াজ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত