খালেদা জিয়ার প্যারোলের খবর প্রোপাগান্ডা: রিজভী

প্রকাশ | ১৮ এপ্রিল ২০১৯, ১৩:৪৯

অনলাইন ডেস্ক

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার প্রপাগান্ডার সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। প্যারোলের নামে মাইনাস তত্ত্বের অশুভ চক্রান্ত করে লাভ হবে না বলে হুশিয়ারি দেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, এ প্রোপাগান্ডাগুলোর সঙ্গে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও জড়িত বলে গুঞ্জন রয়েছে। খালেদা জিয়া প্রচণ্ড অসুস্থ, কিন্তু তা নিয়ে মিডিয়াগুলো নীরব। প্যারোল নিয়ে সরকারি মিশন সফল করার জন্য ক্ষমতাসীনরা চতুর রাজনীতিতে লিপ্ত রয়েছে।

রিজভী বলেন, গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন মিডিয়ায় সূত্রবিহীন একটি খবর ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে যে, খালেদা জিয়া প্যারোলে দেশের বাইরে চলে যাচ্ছেন। এমনকি তারা তারিখও বলে দিচ্ছেন! কিন্তু বাস্তবতা হলো-বিএনপির কোনও সূত্র এমন কিছুই জানে না। অথচ সরকারপন্থী কয়েকটি মিডিয়া প্রতিদিন মনগড়া প্রপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে।

রিজভী আরও বলেন, প্যারোল নিয়ে সরকারি মিশন সাকসেসফুলের জন্য ক্ষমতাসীনরা চতুর রাজনীতিতে লিপ্ত রয়েছে। খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে খুবই বিপর্যন্ত। হাত-পা নাড়তে পারছেন না। আর্থ্রাইটিসের ব্যাথার কারণে পা নাড়াতে পারছেন না। তাকে সুচিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না।

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিযে রিজভী বলেন, তিনি শারীরিকভাবে খুবই বিপর্যন্ত। হাত-পা নাড়তে পারছেন না। আর্থ্রাইটিসের ব্যথার কারণে পা নাড়াতে পারছেন না। তাকে সুচিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। গতকালও চিকিৎসকরা বলেছেন, তার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসছে না। এ অবস্থায় দেশনেত্রী চাচ্ছেন তার পছন্দমতো বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে। কিন্তু এই অবৈধ সরকার তার জীবন হুমকির মুখে ফেলে সুদূরপ্রসারী স্বার্থসিদ্ধির ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে।

খালেদা জিয়ার দ্রুত মুক্তি দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আইনজীবীরা বলেছেন, তাকে যে মিথ্যা সাজানো মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে অন্যায়ভাবে বন্দি করে রাখা হয়েছে, তা সহজ জামিনযোগ্য। আইনি প্রক্রিয়ায় স্বাভাবিক পথে জামিনে মুক্তি চান তিনি।

প্যারোলের নামে মাইনাসতত্ত্বের অশুভ চক্রান্ত করে লাভ হবে না বলে উল্লেখ করে সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে বলব- দেশনেত্রীকে নিয়ে মাইনাস ফর্মুলা বন্ধ করুন। ওয়ান ইলেভেনের সরকার মাইনাস-টু ফর্মুলা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিল। কিন্তু জনগণের প্রাণপ্রিয় দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার আপসহীন কঠোর ভূমিকায় তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল। তারা সফল হলে আজ আপনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন না। প্যারোলের নামে মাইনাস তত্ত্বের অশুভ চক্রান্ত করে লাভ হবে না। তার জামিনে আর বাধা দেবেন না। আদালতে হস্তক্ষেপ বন্ধ করুন। আদালতের উপর থেকে অবৈধ হস্তক্ষেপ বন্ধ হলেই আমাদের নেত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন আইনি প্রক্রিয়ায় জামিনে বেরিয়ে আসবেন। আইনকে তার নিজের গতিতে চলতে দিন। অপতৎপরতা বন্ধ না করলে আখেরে আপনাদেরকে ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে। পরের জন্য গর্ত খুড়লে নিজেকেই সেই গর্তে পতিত হতে হয়-এটা কেবল প্রবাদ নয় বাস্তব। সুতরাং দেশনেত্রী ও বিএনপি-কে নিয়ে চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র বন্ধ করুন।

সরকার দেশ চালাতে ব্যর্থ এমন মন্তব্য করে রিজভী বলেন, মধ্যরাতে ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতার মসনদ দখলে রাখা অবৈধ সরকার দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের লাশের ওপর দেশ চালাচ্ছেন। তাই কোনো কিছুই এখন যেন তাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। দেশে চলছে এক চরম নৈরাজ্য এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতি। দেশে কোনো সরকার আছে বলে অনুমিত হচ্ছে না। খুন-ধর্ষণ-লুটপাটে মত্ত হয়ে পড়েছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। পুলিশ প্রশাসনের যেসব কর্মকর্তা রাতের ভোটে ব্যালটবাক্স ভরে দিয়ে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় বসিয়েছেন, তারাও বেপরোয়া হয়ে গেছেন। সরকারকে পরোয়া করছে না। নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন তারা। প্রতিদিন প্রাত্যহিক খবরের কাগজগুলোর পাতা ভরে থাকছে খুন-ধর্ষণ, পাশবিক নিপীড়নসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক ঘটনায়।