প্রতিরোধের মার্চ

ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানান বঙ্গবন্ধু

প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০১৯, ১২:৩৭

সাহস ডেস্ক

১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনে ছিল উত্তাল সারা বাংলাদেশ। প্রতিদিনের মতো এদিনও ঢাকাসহ সর্বত্র বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের মিছিল-সমাবেশে ছিল মুখরিত।

লাখো মুক্তিকামী বাঙালির উত্তাল আন্দোলন-সংগ্রাম ও সশস্ত্র প্রস্তুতিতে শঙ্কিত হয়ে পড়ে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা। বিরোধী দলের নেতারা পাকিস্তানের অনিবার্য ভাঙন নিশ্চিত বুঝতে পেরে একাত্তরের এদিন জরুরি বৈঠকে মিলিত হন।

বৈঠক শেষে অবিলম্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানান। কিন্তু সেদিকে তোয়াক্কা না করে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে স্বাধীনতার সংগ্রাম দমনের নিষ্ঠুর পরিকল্পনা নিতে থাকে হানাদাররা।

কর্মচারীদের অনুপস্থিতির কারণে এদিনও বন্ধ থাকে সরকারি, আধা-সরকারি অফিস-আদালত। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বেঁধে দেয়া সময়ানুযায়ী কাজ চলে। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বাসভবন, যানবাহনে ওড়ে কালো পতাকা।

এদিন সিএ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ, নৌ- পরিবহন, ডক, পাট ও সুতা কলের শ্রমিক সংগঠনগুলো, ছাত্র ইউনিয়ন মিছিল-সমাবেশ করে অসহযোগ আন্দোলনে পূর্ণ সমর্থন জানায়। স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতারা ইকবাল হল (বর্তমানে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) প্রাঙ্গণে পরিষদের সব আঞ্চলিক শাখার আহ্বায়ক, সম্পাদক ও সদস্যদের সভা আহ্বান করে। সন্ধ্যায় ছাত্রলীগ লালবাগ আঞ্চলিক শাখার সভা অনুষ্ঠিত হয়।

নিউজ পেপার প্রেস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের বিশাল মিছিল নগরীর প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে এসে সমবেত হয়। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিস্ফোরণের দিকে ধাবমান- এ উপলব্ধি থেকে ৪৫ জাতিসংঘ কর্মীসহ ২৬৫ জন বিদেশি নাগরিক ঢাকা ত্যাগ করেন।

একাত্তরের এই দিনে পাকিস্তান সরকার এক ফরমান জারি করে। এতে ১৫ মার্চের মধ্যে সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে স্ব স্ব কর্মস্থলে যোগদানের আদেশ দেয়া হয়, অন্যথায় চাকরিচ্যুতিসহ দশ বছরের কারাদণ্ড প্রদানের হুমকি দেয়া হয়।

এ নিয়ে বিকালে চট্টগ্রাম সংগ্রাম পরিষদ লালদীঘিতে জনসভা করে। জনসভায় নেতারা সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তাদের পাকিস্তানের সঙ্গে অসহযোগ করতে আহ্বান জানান। চট্টগ্রামবাসীকে আসন্ন যে কোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানানো হয়।

সভায় পাকিস্তানি আর্মিদের বিরুদ্ধে বিহারিদের অস্ত্র সরবরাহের কথা বলা হয়। এদিন শেরশাহ, ফিরোজ শাহ কলোনি, পতেঙ্গা, রেলওয়ে কলোনি, হালিশহর, পাহাড়তলীর বিহারি কলোনিগুলোতে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র সরবরাহ করছিল পাক আর্মিরা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত