সিরাজগঞ্জ উপজেলায় আওয়ামী লীগ ৩, বিদ্রোহী ২ জন জয়ী

প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০১৯, ১২:৪৫

সাহস ডেস্ক

সিরাজগঞ্জের ৫টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন আওয়ামী লীগ মনোনীত ৩ জন ও ২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন।

জেলার মোট ৮টি উপজেলার মধ্যে সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুরে ও উল্লাপাড়ায় গত ১৯ ফেব্রুয়ারি মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষদিনে এই ৩টিতে কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন।

রবিবার (১০ মার্চ) ভোট গণনা শেষে রাত ১০টা থেকে এ ফলাফল ঘোষণা শুরু করেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তাগণ। রাত ১টার দিকে বেলকুচি উপজেলায় সর্বশেষ ফলাফল ঘোষণা করা হয়। 

রির্টানিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ ফিরোজ মাহমুদ জানান, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন। মোট ১৭১টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১টি কেন্দ্রে ভোট স্থগিতের কারণে ১৭০টি কেন্দ্রে শুধু ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে এস,এম, নাসিম রেজা দিপু টিউবওয়েল প্রতীক নিয়ে ৫৩ হাজার ২৫৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। মোট ২ জন প্রার্থীর অপর প্রার্থী মোঃ জিহাদ আল ইসলাম ভোট পেয়েছেন ১৩ হাজার ৮২০ ভোট। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাসনা হেনা ৫৪ হাজার ৯৮৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। মোট ২ জন প্রার্থীর মধ্যে অপর প্রার্থী মোছাঃ নুরে ফাতেমা ফুটবল প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ১২ হাজার ৪৯৬ ভোট। 

তিনি আরো জানান, কাজিপুর উপজেলাতে চেয়ারম্যান প্রার্থী খলিলুর রহমান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হওয়ায় ১১৪টি কেন্দ্রে ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ভাইস চেয়ারম্যান পদে দ্বীন মোহাম্মদ চশমা প্রতীক নিয়ে ১৭ হাজার ৭৮১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন মোট ৫ জন প্রার্থীর মধ্যে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোঃ শাহিনুল ইসলাম শাহিন মাইক প্রতীক নিয়ে ১১ হাজার ৭১৮ ভোট পেয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোছাঃ শাপলা খাতুন পদ্মফুল প্রতীক নিয়ে ২১ হাজার ৮১৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। মোট ৪ জন প্রার্থীর মধ্যে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোছাঃ সুলতানা হক ফুটবল প্রতীক নিয়ে ১৪ হাজার ৯৫৭ ভোট পেয়েছেন।

রায়গঞ্জ উপজেলা সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন অফিসার মোঃ মাসুদ রানা জানান, এ উপজেলার ১০৮টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে সবকটির ফলাফলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতীক নিয়ে ইমরুল হাসান তালুকদার ইমন ৭৯ হাজার ৩৮৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিদ্রোহী প্রার্থী গোলাম হোসেন সরকার শোভন আনারস প্রতীক পেয়েছেন ২৬ হাজার ১৫৩ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোঃ রেজাউল করিম বাচ্চু টিউবওয়েল প্রতীক নিয়ে ২৩ হাজার ৪০৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। মোট ৫ জন প্রাথীর মধ্যে তার নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী মোঃ আব্দুর রউফ সরকার তালা প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ২২ হাজার ৯৩৩ ভোট। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নিস্কৃতি দাস হাঁস প্রতীক নিয়ে ৫৫ হাজার ৩৫৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। মোট ৩ জন প্রার্থীর মধ্যে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোছাঃ পরি খাতুন ৩০ হাজার ৩৭০ ভোট পেয়েছেন।

চৌহালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবু তাহির জানান, উপজেলার ৪৯টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে সবকটির বেসরকারি ফলাফলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ফারুক হোসেন সরকার নৌকা প্রতীক নিয়ে ৩৪ হাজার ৯৪৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মেজর (অব:) আব্দুল্লাহ আল মামুন দোয়াত কলম প্রতিক নিয়ে ৯ হাজার ৭৫৪ ভোট পেয়েছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোঃ বাবুল সরকার মাইক প্রতীক নিয়ে ২০ হাজার ৫৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। মোট ৭ জন প্রাথীর মধ্যে তার নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী মোঃ রেজাউল করিম চসমা প্রতীক নিয়ে ৯ হাজার ৯৭০ ভোট পেয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নাসরিন আক্তার হাঁস প্রতীক নিয়ে ১৫ হাজার ২১৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। মোট ৩ জন প্রাথীর মধ্যে তার নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী মোছাঃ রুমানা পারভিন কলস প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ১৪ হাজার ৫৬৭ ভোট।

শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হুসেইন খান জানান, উপজেলার ১৩৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ভোট জালিয়াতির অভিযোগে দুটি কেন্দ্র স্থগিত ঘোষণা করা হয়। বাকী ১৩৭টি কেন্দ্রের বেসরকারি ফলাফলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ আজাদ রহমান ২ লাখ ১৯ হাজার ৬২৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী মুক্তার হাসান লাঙল প্রতিকে পেয়েছেন ৬ হাজার ৪৯৮ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে লিয়াকত আলী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে এলিজা খানের কোন প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন।

তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইফফাত জাহান বলেন, এ উপজেলার সবকটি কেন্দ্রের বেসরকারি ফলাফলে স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুজ্জামান মনি দোয়াত কলম প্রতিকে ৩৯ হাজার ৮৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সঞ্জিত কুমার কর্মকার নৌকা প্রতিকে পেয়েছেন ২৯ হাজার ৪৪৫ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোঃ আনোয়ার হোসেন খান বৈদ্যুতিক বাল্ব প্রতীক নিয়ে ২১ হাজার ২৬৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। মোট ৫ জন প্রাথীর মধ্যে তার নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী মোঃ শাহিনুর আলম লাবু উড়োজাহাজ প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ১৮ হাজার ৯০ ভোট। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোছাঃ মর্জিনা খাতুন বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ৩২ হাজার ৭২৯ ভোট। মোট ৩ জন প্রার্থীর মধ্যে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মাহফুজা আক্তার ফুটবল প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ২৪ হাজার ৯৪১ ভোট।

অপরদিকে বেলকুচি উপজেলায় দু’দফা ভোট গণনা শেষে রাত ১টার দিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুল ইসলাম সাজেদুলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ আবুল হোসেন জানান নুরুল ইসলাম সাজেদুল দোয়াত কলম প্রতিকে পেয়েছেন ৩৭ হাজার ৭৪৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী মীর সেরাজুল ইসলাম আনারস প্রতিকে পেয়েছেন ৩৭ হাজার ৭২৩ ভোট। 

এদিকে উল্লাপাড়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শফি, ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনিরুজ্জামান পান্না ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রিবলি ইসলাম কবিতা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় কারণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি।

সাহস২৪.কম/রিয়াজ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত