ইয়াবাকারবারিদের আত্মসমর্পণ

প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৩:০১

সাহস ডেস্ক

আত্মসমর্পণ করেছেন টেকনাফের ১০২ জন ইয়াবাকারবারি। এসময় তারা ৩ লাখ ৫০ হাজার ইয়াবা ও ৩০টি দেশীয় পিস্তল জমা দেন।

শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠের মঞ্চে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে তারা আত্মসমর্পণ করেন।

এর আড়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘সেফহোম’ থেকে শীর্ষ ইয়াবাকারবারিদের কক্সবাজারের টেকনাফে আত্মসমর্পণ মঞ্চে আনা হয়। মঞ্চের কাছে একটি দোতলা ভবনে তাদের রাখা হয়। আত্মসমর্পণকারীদের দেখতে তাদের স্বজন ও এলাকার হাজারো মানুষ ভিড় জমান। তালিকাভুক্ত কয়েকজন ইয়াবা কারবারিকেও অনুষ্ঠানস্থলে দর্শক হিসেবে কাছে দেখা গেছে।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, আত্মসমর্পণ করতে আসা ইয়াবা কারবারিদের বেশ কয়েকটি শর্ত দেয়া হচ্ছে। তা হলো, নিজের হেফাজতে থাকা সকল ইয়াবা ও অবৈধ অস্ত্র পুলিশের কাছে হস্তান্তর করতে হবে।

আত্মসমর্পণের আগে দায়ের হওয়া মামলা ও বিচারকার্যক্রম স্বাভাবিক নিয়মে চলবে।

ইয়াবা ব্যবসায় নিজের/পরিবারের সদস্য বা আত্মীয়-স্বজনের নামে-বেনামে অর্জিত সকল সম্পদ দুদক, সিআইডির মানি লন্ডারিং শাখা ও এনবিআরের মাধ্যমে যাচাই করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়ায় দায়ের হওয়া মামলায় সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে সহায়তা প্রদান করা হবে।

যে সকল মাদক ব্যবসায়ী এখনো সক্রিয় তাদের ব্যাপারে তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে হবে।

আইনি প্রক্রিয়ায় মুক্ত হলে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার পাশাপাশি নিজ নিজ এলাকায় মাদকবিরোধী কর্মকাণ্ড করতে হবে।

ভবিষ্যতে কখনো মাদক ব্যবসা সংক্রান্ত অপরাধে জড়িত হওয়া যাবে না।

অনুষ্টানে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দিন, উখিয়া-টেকনাফের সংসদ সদস্য শাহিন আক্তার, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন ও জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন ও টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ আইনৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

জানা যায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় কক্সবাজার জেলায় এক হাজার ১৫১ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী রয়েছেন। এদের বেশিরভাগ সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের। ইয়াবার বিরুদ্ধে গত বছরের ৪ মে থেকে শুরু হয়েছে বিশেষ অভিযান।

এখন পর্যন্ত সীমান্তে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন ৪২ কারবারি। এর মধ্যে ৩৭ জনই টেকনাফের। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ৭৩ জন গডফাদারের মধ্যে মাত্র চারজন ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। এটি দেখেই প্রাণ বাঁচাতে ইয়াবায় অভিযুক্তরা আত্মসমর্পণ করতে সেফহোমে যান।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত