আধুনিক কৃষি গড়ে তুলতে প্রয়োজন দক্ষ জনশক্তি: কৃষিমন্ত্রী

প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৩:৫০

সাহস ডেস্ক

‘বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। জননেত্রীর নেতৃত্বে ও কৃষিবিদদের সহযোগিতায় আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। সারা বিশ্বে আমাদের সম্মান বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের বাজেটের আকার ও জিডিপি অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে’- বলেছেন কৃষিমন্ত্রী কৃষিবিদ ড. মো. আবদুর রাজ্জাক।

১৩ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) কৃষিবিদ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) বঙ্গবন্ধু স্মৃতি চত্বরে আয়োজিত ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে আধুনিক কৃষি’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী একথা বলেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে পুষ্টি ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণ ও আধুনিক কৃষি গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে। একসময় বাংলাদেশ ছিল দুর্ভিক্ষ ও দুর্যোগের দেশ।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের এখন বিনিয়োগ বৃদ্ধি করে বেশি বেশি শিল্পকারখানা গড়ে তুলতে হবে। কৃষিকে বাণিজ্যিকীকরণ করতে হবে। কৃষির উন্নয়ন ও শিল্পায়ন পাশাপাশি চলতে হবে। দেশের উন্নয়নে দক্ষ জনশক্তি প্রয়োজন। শিক্ষার মান বিশ্বমানের করতে ও দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে বিশ্ববিদ্যালয়কে ভূমিকা রাখতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘কৃষিবিদ দিবসের ঐতিহাসিক তাৎপর্য রয়েছে। কৃষিতে সমৃদ্ধি ও কৃষিবিদদের মর্যাদা বৃদ্ধি করতে ১৯৭৩ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে কৃষিবিদদের মর্যাদার কথা ঘোষণা করেন। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্যই আজকের এ আয়োজন।’

তিনি আরো বলেন, ‘এই মিলনমেলার ফলে সবার সঙ্গে দেখা ও মতবিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।’ এ সময় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ও শিক্ষকদের কথা বর্ণনা করে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন কৃষিমন্ত্রী।

দিবসটি উপলক্ষে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলিপ্যাডে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও পায়রা উড়িয়ে কৃষিবিদ দিবসের উদ্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রী কৃষিবিদ ড. আবদুর রাজ্জাক। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ের বরেণ্য কৃষিবিদ, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে আয়োজিত বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বঙ্গবন্ধু চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

দিবসটি উপলক্ষে সেখানে কৃষিমন্ত্রী কৃষিবিদ ড. আবদুর রাজ্জাক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু ও সংসদ সদস্য কৃষিবিদ আবদুল মান্নানকে সম্মাননা প্রদান করে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।

সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আলী আকবরের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী কৃষিবিদ ড. আবদুর রাজ্জাক এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু ও সংসদ সদস্য কৃষিবিদ আব্দুল মান্নান।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাকৃবির ইমেরিটাস অধ্যাপক কৃষিবিদ ড. এম এ সাত্তার মণ্ডল এবং প্রবন্ধের আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ ও বিডিবিএলের সাবেক চেয়ারম্যান কৃষিবিদ মো. ইয়াছিন আলী।

মূল প্রবন্ধে ইমেরিটাস অধ্যাপক কৃষিবিদ ড. এম এ সাত্তার মণ্ডল বলেন, ‘বাংলাদেশ একটা বড় ধরনের গল্প। এখন বাংলাদেশ একটি রোল মডেল।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালের এই দিনে এই চত্বরেই কৃষিবিদদের মর্যাদা দিয়েছিলেন। অতি অল্প সময়ে খাদ্য ঘাটতির একটি দেশ কীভাবে খাদ্যে স্বয়ংসম্পর্ণ হয় তা আমরা দেখিয়ে দিয়েছি। আমাদের উদ্ভাবিত প্রজাতি এখন অন্যান্য দেশেও চাষ হচ্ছে। কৃষিতে যা ঘটেছে তা বিস্ময়কর। নব্য কৃষি সংস্কৃতি ঘটেছে। বর্তমানে কৃষি অতি লাভজনক ও অভিজাত পেশা।’

এই সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জসিমউদ্দিন খান ও বাকৃবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী সম্পাদক কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা। অনুষ্ঠানে প্রায় পাঁচ সহস্রাধিক কৃষিবিদ অংশগ্রহণ করেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত