সীমান্তে মিয়ানমারের সেতু

প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০১৯, ১৭:২৬

সাহস ডেস্ক

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তমব্রু সীমান্তে শূন্যরেখা ঘেঁষে খালে সেতু নির্মাণ করছে মিয়ানমার। এতে বর্ষা মৌসুমে শূন্যরেখায় বসবাসকারী রোহিঙ্গা বসতি ও বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কৃষিজমি পানিতে তলিয়ে যাবে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বারবার চিঠির মাধ্যমে মিয়ানমারকে এ সংকটের কথা অবহিত করা হলেও নির্মাণকাজ বন্ধ করা হয়নি। বরং আরো বেশি সংখ্যক শ্রমিক নিযুক্ত করে দ্রুতগতিতে নির্মাণকাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সূত্র জানিয়েছে।

কক্সবাজার বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল এস এম বায়েজিদ বলেন, গত সোমবার নো-ম্যানস ল্যান্ডে কেন পাকা পিলার নির্মাণ করা হচ্ছে, তা জানতে চেয়ে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপিকে চিঠি দেয় বিজিবি। কিন্তু আজ পর্যন্ত চিঠির কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় কোনারপাড়া এলাকার খালটি তমব্রু খাল হিসেবে পরিচিত। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে কাঁটাতারের বেড়া ঘেঁষে ওই খালে একটি সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করেছে মিয়ানমার। দু'দিন থেকে এই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সীমান্ত এলাকার মানুষজন।

শূন্যরেখায় বসবাসকারী রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ জানান, শূন্যরেখা থেকে তাদের সরাতে মিয়ানমার সেনাবাহিনী নতুন নতুন কৌশল নিচ্ছে। প্রতিদিনই ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে তাদের ভয় দেখানো হচ্ছে। রাতে কাঁটাতারের বেড়ার পাশে এসে সেনাবাহিনীর লোকজন বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে।

তিনি বলেন, খালে নতুন করে সেতু তৈরি করছে তাদের সরানোর জন্য। সেতুটি তৈরি হলে বর্ষা মৌসুমে শূন্যরেখাসহ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কোনারপাড়া সীমান্ত এলাকা কৃষিজমি পানিতে তলিয়ে যাবে। ফলে এখানে আশ্রয় নেওয়া চার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হবে।

নির্মাণাধীন সেতুটির ব্যাপারে এক রোহিঙ্গা শরণার্থীর (৬০) কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে যখন এইখানে তারকাঁটা দিছে, ওইখানে যে ওয়াল-টোয়াল করি দিছে, তা হইলে এখানে যে পানি ওইখানে দিয়ে চলি যাইতে না পারলে এখানে পানি উঠি যায়। এখানে কোনারপাড়া সব ডুবি যায়। তা হইলে ওইখানে যদি আবার যদি ব্রিজ দিলে তাহলে এইখানে এই তুমব্রু কোনারপাড়ায় কোনো লোকজন থাকতে।’

আরেক রোহিঙ্গা শরণার্থী বলেন,  ‘ব্রিজ ছাড়াই এখানে পানি ওঠে, এখানে ফ্লাড হয়। যদি কাঁটাতার দেয়, এখানে এইটা ওইটা ছাতা ময়লা বাজবে, আরো পানি বাড়বে। শুধু আমরা ক্ষতি হবো না। এখানে বাংলাদেশও ক্ষতি হবে। আমরা তো ছয় মাস থাকব, নাইলে এক বছর থাকব। কাঁটাতার হইলে বাংলাদেশের জন্য খুব ক্ষতি হবে।’

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত