আহমদ শফীর সমালোচনায় মির্জা ফখরুল

প্রকাশ : ১৩ জানুয়ারি ২০১৯, ১৮:২৪

সাহস ডেস্ক

মেয়েদের স্কুল-কলেজে না পাঠানোর বিষয়ে হেফাজতের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর বক্তব্যের সমালোচনা করে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রবিবার (১৩ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “তিনি (শফি) নারীবিরোধী যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা অনাকাঙ্ক্ষিত, অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক।”

গত শুক্রবার হাটহাজারি দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারি মাদ্রাসার ১১৮ তম বার্ষিক মাহফিলে মাদ্রসার পরিচালক শফী মেয়েদের পড়ালেখা না করানোর ওয়াদা করান।

তিনি বলেন, “আপনাদের মেয়েরা… আপনাদের মেয়েরা.. ইশকুল-কলেজে দিবেন না। বেশির থেকে বেশি ক্লাস ফোর ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত পড়াইতে পারবেন। বিবাহ দিলে স্বামী স্বামীর টাকা পয়সা, এগুলা হিসাব রাইখতে হবে, উনার কাছে চিঠি লিখতে হবে, স্বামীর কাছে।

“আর বেশি যদি পড়ান, পত্রপত্রিকায় দেখতেছেন আপনারা… ওই মাইয়া, ক্লাস এইট, নাইন, টেন, এমএ, বিএ… এইগুলা পইড়লে, ওইটা কিছুদিন পরে আপনার মেয়ে থেইকবে না।… অন্য কেহ নিয়ে যাবে।”

বিবৃতিতে ফখরুল বলেন, ‘মেয়েদেরকে স্কুল-কলেজে না পাঠানোর জন্য হেফাজতে ইসলামীর আমিরের বক্তব্যে আমি হতবাক ও বিস্মিত হয়েছি। একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে এই ধরনের বক্তব্য বাংলাদেশিদের আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বিব্রত করবে। নারী-শিক্ষার সাথে ধর্মের কোনো বিরোধ নেই।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি মনে করে নারী সুশিক্ষায় আলোকিত না হলে তাদের বিকাশ ও প্রকৃত ক্ষমতায়ন হবে না। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে শিক্ষিত হওয়া ছাড়া ইসলামে সমাজ কল্যাণ, অর্থনেতিক ও মানবিক সাম্যসহ ইসলামের অন্তর্নিহিত মর্মবাণী বুঝতে সক্ষম হবে না। সন্তানের প্রাথমিক শিক্ষালাভ ঘটে মায়ের কাছ থেকেই। নৈতিক ও অক্ষর পরিচয়ের প্রথম পাঠশালাই হলো মায়ের সাহচর্য। সুতরাং মা সুশিক্ষিত না হলে পারিবারিক প্রতিষ্ঠানটি ঐক্যবদ্ধ ও সুসংহত হয় না। সামাজিক অন্যায় ও বৈষম্য দূর করার জন্য অবশ্যই নারীর শিক্ষা অপরিহার্য।’

বিএনপি মহাসচিব তার বিবৃতিতে আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের মোট জনসমষ্টির অর্ধেকই নারী, প্রাচীন প্রথা ও কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে এসে জাতি গঠনমূলক ও জাতীয় অর্থনীতিতে যথার্থ ভূমিকা পালনের প্রধান শর্ত হচ্ছে নারী শিক্ষা। এটি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ঘোষিত নীতি। নারীরা শিক্ষিত না হলে তারা সমাজে অমানবিক নষ্টবুদ্ধির মানুষদের প্রতারণা, লাঞ্ছনা ও শোষণ-বঞ্চনা থেকে রক্ষা পাবে না। নিগ্রহ ও অসম্মানের হাত থেকে বাঁচতে বাংলাদেশের অক্ষরহীন নারীদের অবশ্যই পড়ালেখা করতে হবে। তা না হলে আমাদের দেশ ও সমাজ অগ্রসরমান পৃথিবী থেকে অনেক পেছনে অবস্থান করবে। হেফাজতে ইসলামীর আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী নারীদের শিক্ষা বিরোধী যে বক্তব্য দিয়েছেন তা অনাকাঙ্ক্ষিত, অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক।’

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত