আলোর উৎসব দিয়ে ঢাকায় পালিত হবে পিরোজপুর মুক্ত দিবস

প্রকাশ : ০৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ১১:৩০

আগামীকাল ৮ ডিসেম্বর। পিরোজপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পিরোজপুর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে পাকবাহিনীর ক্যাম্পে অবস্থানকারী সেনারা পালিয়ে যায়। শত্রুমুক্ত হয় পিরোজপুর। ঘরে ঘরে বিজয়ের পতাকা উড়ে। বীরবেশে শহরে প্রবেশ করে মুক্তিযোদ্ধারা। 

পিরোজপুর মুক্ত দিবস উপলক্ষে প্রতি বছরের মত এবারও ঢাকাস্থ পিরোজপুরবাসী তরুণ-তরুণীদের সংগঠন ‘আপনি-তুমি-তুই’ এর আয়োজনে বৃহৎ পরিসরে আগামীকাল শনিবার (৮ ডিসেম্বর) পিরোজপুর মুক্ত দিবস উদযাপন করা হবে

ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক আলোর উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে থাকছে ৭১’ এ শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন, ফানুস উত্তোলন ও আলোচনা সভা। 

প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালে পিরোজপুর শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বলেশ্বরের নদীর এই ঘাটেই মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এনে গুলি করে হত্যা করত পাক সেনারা ১৯৭১ সালের ২১ মার্চ লাহোর থেকে চলে আসেন পিরোজপুরের সন্তান সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জিয়াউদ্দিন আহমেদ। তার নেতৃত্বে গড়ে ওঠে মুক্তি বাহিনী। এপ্রিল মাসের শেষদিকে সদ্য প্রয়াত ৯নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার মেজর জিয়া তার দলবল নিয়ে সুন্দরবন চলে যান। ওখানে শুরু হয় গেরিলা ট্রেনিং। মঠবাড়িয়া, পাথরঘাটা, শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, কাঁঠালিয়া, ভাণ্ডারিয়া এবং পিরোজপুরের বহু যুবক চলে যায় সুন্দরবন সেখান থেকেই গেরিলা যুদ্ধ শুরু করেন। 

৪ মে পিরোজপুরে প্রথম পাকবাহিনী প্রবেশ করে। পিরোজপুর শহরের প্রবেশ দ্বার হুলারহাট থেকে শহরে প্রবেশের পথে প্রথমেই তারা মাছিমপুর আর কৃষ্ণনগর গ্রামে শুরু করে হত্যাযজ্ঞ। স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় হিন্দু আর স্বাধীনতার পক্ষের মুসলমানদের বাড়িঘরে আগুন দেয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পিরোজপুর অঞ্চলে প্রায় ৩০ হাজার মুক্তিকামী মানুষকে হত্যা করে পাক সেনা ও তাদের দোসরা।

জানা যায়, স্বরূপকাঠীর আটঘর-কুড়িয়ানা পেয়ারা বাগানে মুক্তিযোদ্ধাদের গড়ে তোলা দুর্গে পাকবাহিনী আক্রমণ করলে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে বহু পাক সেনা নিহত হয়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণে পাকবাহিনী পর্যুদস্ত হতে থাকে। অবশেষে ৮ ডিসেম্বর পিরোজপুর ছেড়ে তারা চলে যেতে বাধ্য হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধে তৎকালীর আওয়ামী লীগের এমএনএ প্রয়াত এনায়েত হোসেন খান, এমপি প্রয়াত ডা. আবদুল হাই, ন্যাপের (মা) অ্যাডভোকেট আলী হায়দার খান, অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক, ভাসানী ন্যাপের প্রয়াত শহীদুল আলম নীরু নেতৃত্ব দেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত