শিশুর লাশ উদ্ধার, বাবা আটক

প্রকাশ : ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৫:১৩

সাহস ডেস্ক

রাজধানীর বাংলামোটরের লিংক রোডের একটি বাসা থেকে কাফনের কাপড়ে মোড়ানো টেবিলের ওপর থেকে শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে র‌্যাব ও পুলিশ। এ সময় জিম্মি করে রাখা আরেক শিশুকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শিশুটির বাবাকে আটক করা হয়েছে।

বুধবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর বাংলামোটরের ১৬ লিংক রোডের একটি বাসায় মাদকাসক্ত বাবার হাতে এক সন্তান খুন হয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

জানা গেছে, সকালে বাংলামোটরের ওই বাসায় বাবা নুরুজ্জামান কাজল তার দুই শিশুসন্তানকে ‘জিম্মি’ করে রেখেছেন এমন সংবাদে বাসাটি ঘিরে ফেলে পুলিশ। কিছুক্ষণ পরে র‌্যাব, পুলিশ, আনসার ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যেরা বাড়িটি ঘিরে ফেলেন। পরে পুলিশ ও র‌্যাব ভেতরে ঢুকে এক শিশুর লাশ দেখতে পায়।

র‌্যাব-২–এর এসআই শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি বাড়ির ভেতরে ঢুকেছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি শিশুটির বাবা বসে আছেন, তার পাশে একজন হুজুর বসে আছেন। শিশুটিকে কাফনের কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় একটি টেবিলের ওপর রাখা হয়েছে। শিশুটির বাবাকে কোনো সাহায্য লাগবে কি না—জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আপনাদের কারও সাহায্য লাগবে না। আপনারা কেন এসেছেন? আপনারা চলে যান। বেলা একটার দিকে আমি নিজে আজিমপুর কবরস্থানে গিয়ে আমার ছেলেকে দাফন করব।”’

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, ‘ওই বাসায় একটি শিশু মারা গেছে বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। শিশুটির বয়স আড়াই থেকে তিন বছর। শিশুর বাবা এর আগে মাদক গ্রহণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। জেলেও পাঠানো হয়।'

ডিএমপির রমনা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) এহসানুল ফেরদৌস বলেন, দফায় দফায় বাসায় ঢোকার চেষ্টা করেও ভেতরে ঢুকতে ব্যর্থ হয়ে মসজিদে মাইকিং করি আমরা যে, সাফায়েত মারা গেছে, বাদজোহর তার নামাজে জানাজা হবে। এরপর কাজলের সঙ্গে মসজিদের হুজুরদের দিয়ে কথা বলানো হয়। তাকে বলা হয়, সাফায়েতের জানাজা পড়াবো, সবাই মিলে মাটি দেবো। আপনি বেরিয়ে আসেন। এক পর্যায়ে জীবিত শিশুটি (সুরায়েত) নিয়ে তিনি বেরিয়ে আসেন। তখন মৃত সাফায়েতের মরদেহ নিয়ে বেরিয়ে আসেন আরেক হুজুর। নিচে এলে আমরা কাজলকে ধরে ফেলি।

এহসানুল ফেরদৌস জানান, শিশুটির বাবা পুলিশের কাছে দাবি করেছেন- সাফায়েত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে। তবে মরদেহের ময়না-তদন্ত হলে বোঝা যাবে। 

পরে কাজলকে আটক করে এবং শিশুটির মরদেহ নিয়ে শাহবাগ থানায় চলে যান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান।

সাফায়েতের ফুফু রোকেয়া বেগম বলেন, আমার বাবা ছিলেন মনু মেম্বার। সাত ভাই সাত বোন আমরা। বাবা সবার প্রাপ্য সম্পত্তি ভাগ করে দিয়ে গেছেন। ভাগ অনুযায়ী ভাই এখানেই (বাংলামোটর) থাকতেন। তিনি পাগলামি করতেন, পাগলামি করে গত তিন মাস আগে বাসা থেকে সবাইকে বের করে দেন। সেজন্য স্ত্রীও অন্য জায়গায় থাকতেন।

কাজল তার সন্তানদের খুবই আদর করতেন জানিয়ে রোকেয়া বলেন, পাগলামির কারণে তিন মাস আগে পরিবারই ভাঙচুরের মামলা দিয়েছিল, সে কারণে তাকে জেলে যেতে হয়েছিল। পরে আবার স্ত্রীই তাকে জামিন দিয়ে বের করে আনেন। বুধবার সকালে উজ্জ্বলকে ফোন দিয়ে কাজল জানান, সাফায়েত মারা গেছে। কিন্তু সবাই ছুটে এলে কাজল দা হাতে নিয়ে তাড়িয়ে দেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত