ইসিতে ঐক্যফ্রন্টের বিরুদ্ধে পাল্টা নালিশ ১৪ দলের

প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০১৮, ১৩:০৩

প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রত্যাহারের বিরোধিতা করে নির্বাচন কমিশনে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বিরুদ্ধে পাল্টা নালিশ দিয়েছে ১৪ দল। ঐক্যফ্রন্ট ১৩ দফা দাবি জানানোর পরদিন ৮ দফা দাবি নিয়ে নির্বাচন কমিশনে যায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল।

শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) বিকালে ১৪ দলীয় জোটের পক্ষে দিলীপ বড়ুয়া প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে তাদের দাবি সম্বলিত চিঠি পৌঁছে দেন। পরে তারা নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এবং অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমানের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠক করেন।

১৪ দলের শরিকদের মধ্যে গণতন্ত্রী পার্টির শাহাদাত হোসেন, জেপির শেখ শহীদুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ওয়াজেদুল ইসলাম খান, বাসদের রেজাউর রহমান, ন্যাপের ইসমাইল হোসেন, গণআজাদী লীগের এস কে সিকার, জাসদের নাদের চৌধুরী, ওয়ার্কার্স পার্টির কামরুল আহসান, তরিক ফেডারেশনের সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, জাসদের সহ দপ্তর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন ছিলেন প্রতিনিধি দলে।

বৈঠক শেষে দিলীপ বড়ুয়া সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট যেসব অভিযোগ করছে তা উদ্ভট, বানোয়াট ও মিথ্যাচার। আমরা কমিশনকে ৮ দফা লিখিতভাবে দিয়েছি। প্রশাসনে প্রত্যাহার যথাযথ মনে করি না। নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ করতেই ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপির পক্ষ থেকে নানা ধরনের অভিযোগ তোলা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, প্রশাসনে রদবদল ইসির এখতিয়ার। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলেই তা কমিশন করবে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন ও মাঠ প্রশাসন-পুলিশকে মনস্তাত্ত্বিকভাবে দুর্বল করতে বিএনপি ও ঐক্যফন্ট একেরপর এক অভিযোগ আনছে। তাদের হিডেন এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির জন্যই তা করা হচ্ছে।

আট দফা

১. সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি তারেক রহমানকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করায় বিএনপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে ইসিকে।

২. ঐক্যফ্রন্ট ভোটকেন্দ্র পাহারা দেওয়ার কথা বলে ‘সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টির ষড়যন্ত্র’ করছে, যা আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল। ঐকফ্যন্ট নেতা কামাল হোসেন ১৭ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের মতবিনিময় সভায় নির্বাচনী সভা করেছেন। এটা আচরণবিধি লঙ্ঘন।

৩. যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর অর্ধশাতিক ব্যক্তি বিএনপির মনোনয়নের জন্য আবেদন করেছে। এতে আতঙ্ক ও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে ইসিকে ব্যবস্থা নিতে হবে।

৪. সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা জোরদার।

৫. পর্যবেক্ষকের নামে যাতে অযাচিত পক্ষাবলম্বন না করা হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

৬. ইসি কার্যালয়ে রিটার্নিং অফিসারদের ব্রিফিং শেষে কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তলব করার ‘মনগড়া ও কাল্পনিক’ অভিযোগ করেছে বিএনপি। বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এ ধরনের মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তি’ ছড়ানোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

৭. বিএনপির পক্ষ থেকে ৯২ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ‘বানোয়াট ও মিথ্যা’ অভিযোগ করা হয়েছে। এটি প্রশাসনকে ‘মানসিকভাবে কোনঠাসা’ করে নিজেদের ‘সুপ্ত এজেন্ডা’ বাস্তাবায়নের একটি ‘অপকৌশল’ মাত্র। এ ধরনের রদবদল হলে প্রশাসনিক কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়বে। বিএনপির এ দাবির পক্ষে পদক্ষেপ নেওয়ার যৌক্তিকতা নেই।

৮. ইসি সচিবসহ প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তার শাস্তি দাবিসহ গোটা প্রশাসনে রদবদল দাবি ‘ষড়যন্ত্র’ ছাড়া কিছুই নয়। নির্বাচন ‘প্রশ্নবিদ্ধ ও বানচালের ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার জন্য’ এসব দাবি উত্থাপন করা হচ্ছে।

আচরণবিধি ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী এসব ‘তৎপরতার’ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইসির কাছে দাবি জানিয়েছে ১৪ দল।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত