বিবিসির অনুপ্রেরণাদায়ী নারীর তালিকায় হৃদয়ের মা

প্রকাশ : ২০ নভেম্বর ২০১৮, ১৩:০৩

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বিশ্বের ১০০ অনুপ্রেরণাদায়ী ও প্রভাবশালী নারীর তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে স্থান করে নিয়েছেন প্রতিবন্ধী ছেলে হৃদয়কে কোলে করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে নিয়ে আসা বাংলাদেশি মা সীমা সরকার।

বিবিসির তালিকায় ৮১তম স্থানে রয়েছেন সীমা সরকার। বিশ্বের ৬০টি দেশের ১৫ থেকে ৯৪ বছর বয়সী বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রেরণাদায়ী ও প্রভাবশালী নারীদের নিয়ে এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। আজ সোমবার বিবিসি অনলাইনে ওই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

ওই তালিকায় আছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের মেয়ে চেলসি ক্লিনটন, অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া গিলার্ড (৩৬) ও পাকিস্তানের প্রথম হিন্দু নারী সিনেটর কৃষ্ণকুমারীর (৪৮) মতো নারীরা। চেলসি ২০, গিলার্ড ৩৬ ও কৃষ্ণকুমারী ৪৮তম অবস্থানে আছেন। এই তালিকায় সবার ওপরে স্থান পেয়েছেন নাইজেরিয়ার সমাজ পরিবর্তনে ভূমিকা রাখা উদ্যোক্তা ৩৩ বছর বয়সী আবিসোয়ে আজেয়ি আকিনফোলারিন। তাঁর পরে আছেন যথাক্রমে বাহরাইনের এসরা আল সাফেই ও রাশিয়ার এসভেতলানা আলেকসিভা। এসরা আল সাফেই অলাভজনক একটি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্বে আছেন। আর রুশ এসভেতলানা আলেকসিভা একজন মডেল।

সীমা সরকার প্রসঙ্গে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সীমা সরকার যিনি তার ১৮ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী ছেলেকে কোলে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রে যান। এই ছবি সাড়া জাগায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। মায়ের এমন ভালোবাসায় মুগ্ধ হয় অনেকে। প্রতিবন্ধী ছেলেকে পড়াশোনা করানোয় নিগ্রহের শিকারও হয়েছেন সীমা সরকার। স্বল্প আয়ের পরিবারে প্রতিবন্ধী শিশুকে পড়াতে গিয়ে আর্থিক অনটনেও পড়েছেন সীমা সরকার।

বাংলাদেশে প্রায় কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই শারীরিক প্রতিবন্ধীদের চলাচলের জন্য ব্যবস্থা নেই। ছেলেকে কোলে নিয়ে তিন-চার তলা সিঁড়িও বেয়েছেন সীমা সরকার। এই ছবি সাড়া জাগায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। মায়ের এমন ভালোবাসায় মুগ্ধ হয় অনেকে।

জানা গেছে, সীমা সরকারের ছেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী হূদয় সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘খ’ ইউনিটে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান এই ব্যাপারে বলেন, ‘যুগের চাহিদা মেটানো ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের জন্য আমরা আমাদের প্রতিবন্ধী কোটার বিধিমালায় সংস্কার এনেছি ৷ আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু দৃষ্টি, শ্রবণ আর বাকপ্রতিবন্ধীদের জন্য প্রতিবন্ধী কোটা প্রযোজ্য ছিল ৷ এর সঙ্গে আমরা শারীরিক প্রতিবন্ধীদেরও যুক্ত করেছি, যাতে ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি ছেলেমেয়েরা মেধার স্বাক্ষর রাখলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পায় ৷ অবস্থাদৃষ্টে বাস্তবতার নিরিখে এটি করা হয়েছে৷’

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত