আজ শেলাবুনিয়ায় সমাহিত হবে ফাদার রিগন

প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০১৮, ১৩:২৫

সাহস ডেস্ক

‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা’ প্রাপ্ত ও বাংলাদেশের নাগরিকত্ব অর্জনকারী ইতালির খ্রিস্ট ধর্মযাজক ফাদার মারিনো রিগনকে বাগেরহাটের মোংলায় সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে। বাংলাদেশ সরকার ফাদার রিগনের শেষ ইচ্ছার প্রতি সম্মান দেখিয়ে তার দেহাবশেষ বাংলাদেশের মাটিতে তারই স্থাপিত শেলাবুনিয়া চার্চের পাশে সমাহিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।

আজ রবিবার (২১ অক্টোবর) সকালে ঢাকা থেকে একটি হেলিকপ্টারে করে তার দেহাবশেষ মোংলা উপজেলা কমপ্লেক্স চত্বরে আনা হয়। সেখানে সর্বস্তরের মানুষ তাকে শ্রদ্ধা জানায়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয় ফাদার রিগনকে।

এসময়, খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, ইতালিয়ান রাষ্ট্রদূত মারিও পালমা, বাগেরহাট জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস, পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায়, মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম, ফ্রান্সিস সুদান হালদার, শেলাবুনিয়া ধর্মপল্লির পালক পুরোহিত শেরাফিন সরকারসহ অসংখ্য ভক্ত ও মোংলার সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে বাংলাদেশের মোংলার ক্যাথলিক মিশনে থাকাবস্থায় ফাদার রিগনকে তার পরিবার ইতালি নিয়ে যায়। জন্মস্থান ইতালির ভিল্লাভেরলা গ্রামে ২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর ৯৩ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই ধর্মযাজক। বাংলাদেশের মাটিতে চিরনিদ্রায় শায়িত হওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছিলেন ফাদার মারিনো রিগন। সেই মতো, মৃত্যুর এক বছর পর জন্মভূমি ইতালি থেকে তার মরদেহ বাংলাদেশ আনা হয়। 

সূত্র জানায়, মাত্র ২৮ বছর বয়সে খ্রিস্টধর্ম প্রচারের ব্রত নিয়ে ১৯৫৩ সালে ৭ জানুয়ারি পূর্ব পাকিস্তানে আসেন মারিনো রিগন। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালিদের পাশে দাঁড়ান তিনি। মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা, আশ্রয় ও সেবা দেয়ার পাশাপাশি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য রিগনকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ও নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশে বসবাসের পর থেকে তিনি বাংলা ভাষা শিখতে শুরু করেন এবং বাংলা সাহিত্যের প্রতি তার কৌতূহল ও নিবিড় ভালবাসার জন্ম হয়। তিনি রবীন্দ্রনাথের রচনাবলি, লালনের সংগীত ও দর্শনের প্রতি বিশেষভাবে আকৃষ্ট হন। তার মাধ্যমে ইতালিয়ান ভাষায় অনূদিত হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘গীতাঞ্জলী’সহ প্রায় ৪০টি কাব্য, জসীমউদ্দীনের ‘নক্সী কাঁথার মাঠ’ ও অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ, লালনের গানসহ অসংখ্য সাহিত্যকর্ম।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত