দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসকে অগ্রাধিকার দিয়েছে: ত্রাণমন্ত্রী

প্রকাশ : ১৩ অক্টোবর ২০১৮, ১৮:৫৫

সাহস ডেস্ক

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বলেছেন, সরকার বিগত ১০ বছরে দুর্যোগ পরবর্তী ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের পরিবর্তে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। এর ফলে দুর্যোগে মানুষের জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি দৃশ্যমানভাবে হ্রাস পেয়েছে।

আজ শনিবার (১৩ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ২০১৮ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘কমাতে হলে সম্পদের ক্ষতি, বাড়াতে হবে দুর্যোগের পূর্ব প্রস্তুতি’।

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী বলেন, আজকের বিশ্ব দুর্যোগে অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার কথা ভাবছে। অথচ বাংলাদেশ ১০ বছর পূর্ব থেকেই দুর্যোগে মানুষের জীবন ও সম্পদহানি কমিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করে আসছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ শাহ্ কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ সম্ভু এমপি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ এমএ হাশিম, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমদ খান, সশস্ত্রবাহিনী বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এজাজুল বার চৌধুরী, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক প্রফেসর ড. মাহবুবা নাসরীন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী বলেন, দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের মধ্যেই নিহিত রয়েছে সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার সাফল্য। এ উপলব্ধি থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে প্রথম দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কর্মসূচি গ্রহণ করেন।

তিনি বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস এবং সাড়াদানে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর ফলে মানুষের মৃত্যুহার ও সহায় সম্পদের ক্ষতি অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।

সরকার যে কোন দুর্যোগে মানুষের মৃত্যুর হার শুন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে চায় জানিয়ে মায়া বলেন, ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে ১০ লক্ষ মানুষ মারা গিয়েছিল। একই মাত্রার ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’য় মাত্র ৬ জন লোক মারা যায়।

দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রত্যেকটি দুর্যোগ মোকাবিলায় পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ, অবকাঠামো নিমাণ, প্রয়োজনীয় উদ্ধার সরঞ্জামাদি সংগ্রহ, স্বেচ্ছাসেবকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে বাংলাদেশ একটি সক্ষম ও সহনশীল জাতিতে উপনীত হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা বিবেচনা করে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশকে দুর্যোগ মোকাবিলায় রোল মডেল বলা হয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ত্রাণমন্ত্রী বলেন, প্রতিবন্ধিতা বান্ধব দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাকে সরকার আন্তর্জাতিক পরিসরে নিয়ে গিয়ে বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করতে পেরেছে। যে কোন দুর্যোগে বিনা পয়সায় ১০৯০ নম্বরে ডায়াল করে দুর্যোগের পূর্বাভাস আবহাওয়া বার্তা জানার অনুরোধ করেন মন্ত্রী।

দিবসটি উপলক্ষ্যে দেশব্যাপী আলোচনা সভা, র‌্যালী, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, পোস্টার প্রদর্শন ও লিফলেট বিতরণ করা হয়। কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় আলোচনা সভা, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ও মেলার আয়োজন করা হয়। ঘূর্ণিঝড়সহ বিভিন্ন দুর্যোগে সাহসিকতার সাথে মানুষের জানমাল রক্ষায় অসাধারণ ভূমিকা রাখায় এ বছর সিপিপির ৮০ জন স্বেচ্ছাসেবককে জাতীয়ভাবে পুরস্কৃত করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত