নীলগাইটির পেটে বাচ্চা

প্রকাশ : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১২:৩৪

সাহস ডেস্ক

গ্রামবাসীর হাতে ধরা পড়া বিরল প্রজাতির নীলগাইটির পেটে বাচ্চা রয়েছে। ধরা পড়ার সময় মানুষের হামলার শিকার হওয়ায় নীলগাইটি মুখে আঘাত পেয়েছে। বতর্মানে প্রাণীটিকে দিনাজপুরের রামসাগর জাতীয় উদ্যানে এনে রাখা হয়েছে। সেখানেই নীলগাইটিকে সারিয়ে তোলার চেষ্টা চলছে।

বন বিভাগের দিনাজপুর-ঠাকুরগাঁও রেঞ্জের কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান , নীলগাইটি সম্ভাব্য বহুপথ পাড়ি দিয়ে এসে ধরা পড়ার সময় মানুষের ধস্তাধস্তিতে কিছুটা আহত হয়েছে। ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের পরামর্শে দিনাজপুর রামসাগর জাতীয় উদ্যানে এনে রাখা হয়েছে। মুখে আঘাত পাওয়ায় সে ঠিকমতো খাচ্ছে না। দিনাজপুর পশুসম্পদ বিভাগের তত্ত্বাবধানে প্রাণীটির শরীরে স্যালাইন পুশসহ চিকিৎসা চলছে।

মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ৪০/৫০ বছর আগেও ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুর এলাকার বন ও মাঠ-প্রান্তরে নীলগাইয়ের দেখা মিলতো। জ্যোৎস্না রাতে দলবেঁধে প্রাণীটি তৃণ খেতে মাঠে চরে বেড়াতো। তবে এখন প্রাণীটি দুর্লভ। বাংলাদেশের কোনও বনে এখন নীলগাই আছে এমনটা শোনা যায় না। তবে ঠাকুরগাঁও থেকে দিনাজপুর সীমান্তের ওপারে ভারতের পশ্চিম দিনাজপুর সংলগ্ন বনাঞ্চলে এখনও নীলগাইয়ের দেখা মেলে।

তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে আসার পর, ধরা পড়ার পর ধস্তাধস্তিতে মুখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পাওয়ায় খেতে না পারা, সর্বোপরি পেটে বাচ্চা থাকায় প্রাণীটির জীবনাশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দিনাজপুর পশুসম্পদ বিভাগ আপ্রাণ চেষ্টা করছে তাকে বাঁচাতে।

দুর্লভ এই প্রাণীটির পুরো দেহ দেখতে গরুর মতো হলেও ঘাড় থেকে মাথা ও মুখ পর্যন্ত হরিণ সদৃশ। এর মুখ হরিণের মতো সূচালো, তবে মাথায় শিং নেই। এই নীল গাইটি মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় গ্রামবাসীদের হাতে ধরা পড়ে। পশুসম্পদ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন এই নীল গাইটি স্ত্রী প্রজাতির। এর গায়ের রঙ লালচে বাদামি। তবে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ নীল গাইয়ের গায়ের রঙ হয় নীলচে ধূসর। মূলত পুরুষ প্রাণীটির গায়ের রঙ থেকেই প্রাণীটির নামকরণ করা হয়েছে।

এলাকাবাসীর বরাতে স্থানীয় সাংবাদিক জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, পশুটিকে ধরতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। কারণ তার ধারণা এটি অনেক দূর পাড়ি দেওয়ায় ক্লান্ত ছিল। তবে ধরার সময় পশুটি কিছুটা আঘাতপ্রাপ্ত হয় বলে পরে জানা যায়। সবাই ধরাধরি করে পশুটিকে আবু জাহিদের বাড়িতে আনেন। খবরটি ছড়িয়ে পড়লে পশুটিকে দেখতে গ্রামবাসী আবু জাহিদের বাড়িতে ভিড় জমায়। পরে জানা যায় এটি বিলুপ্তপ্রায় নীলগাই।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত