‘স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে আমি এখন শঙ্কিত’

প্রকাশ : ০৫ আগস্ট ২০১৮, ১৪:০৮

সাহস ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা এখন যেটা দেখতে পাচ্ছি, সেটা ভয়াবহ। এর ভেতরে তৃতীয় পক্ষ চলে এসেছে। সেখানে গাউছিয়া মার্কেট থেকে স্কুলের ইউনিফর্ম বিক্রি হয়ে গেছে হঠাৎ করে। পলাশী থেকে আইডি কার্ড তৈরি করা হচ্ছে, তাহলে এগুলো কারা করছে? এরা কি আদৌ ছাত্র? কখনো মুখে কাপড় বেঁধে, কখনো হেলমেট পরে, নানা চেহারা নিয়ে ঢুকে যাচ্ছে। আমি এখন শঙ্কিত এই স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে।’

আজ রবিবার (৫ আগস্ট) সকালে গণভবনে বসে সারা দেশে ৩০০ ইউনিয়ন পরিষদে অপটিক্যাল ফাইবার কানেক্টিভিটি উদ্বোধন অনুষ্ঠানের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘একটা শ্রেণি আছে, যাদের কাজই হচ্ছে ঘোলা পনিতে মাছ শিকার করা। কালকে তারা একটা রিউমার ছড়িয়ে দিল, আওয়ামী লীগ অফিসে নাকি চারজনকে মেরে লাশ গুম করে রেখে দিয়েছে। এরপর আওয়ামী লীগ অফিসের ওপর আক্রমণ। এই আক্রমণটা কারা করল। ১৮ জন আহত হলো। ব্যাগের ভেতরে পাথর। তারা ছাত্র হলে ব্যাগের ভেতরে তো বই থাকার কথা, পাথর কেন?’

‘বিডিআর গেটে হামলা এবং সেখানে ব্ল্যাঙ্ক ফায়ার হচ্ছে, এই অস্ত্রটা কোথায় থেকে এলো, কারা গুলি করল,’ প্রশ্ন করেন শেখ হাসিনা।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারের আমলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রভূত উন্নতির কথা তুলে ধরেন এবং একে জীবনে ইতিবাচক কাজে ব্যবহারের তাগিদ দেন। পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার থেকেও সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, তথ্যপ্রযুক্তিকে ব্যবহার করে কেউ কেউ দেশের ভেতরে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।  

সরকারপ্রধান বলেন, ‘কেউ গুজবে কান দেবেন না। কেউ মিথ্যা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না। সেটাই আমি সবাইকে বলব। আপনারা যাই দেখেন, শোনেন আগে যাচাই করে নেবেন। যাচাই না করে কোনো কিছু করবেন না। স্কুলের ছাত্রছাত্রী, যুবসমাজ তাদের প্রতি আমাদের এই আহ্বান থাকবে। কোনোরকম বিভ্রান্তি ছাড়ানো, কোনোরকম গুজব ছড়ানো, এটা করা না। কারণ ইন্টারনেট ব্যবহার করা বা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করা, ফেসবুক, ইউটিউব ভালো কাজে ব্যবহার করেন। নোংরা কাজে না।’ 

শেখ হাসিনা আরো বলেন, 'সেখানে নোংরা কথা বলা, নোংরা বক্তব্য দেওয়াগুলো পরিহার করতে হবে। মাঝে মাঝে যখন দেখি অনেক সময় ধরনের ভাষা ব্যবহার হয়, এমন ধরনের কথা বলা হয়, যেটা নিজেদের পড়তে লজ্জা করে, ঘৃণা হয়। এই ধরনের নোংরা কথা ব্যবহার করা না হয়। আধুনিক প্রযুক্তিকে মানুষের জীবন গড়ার কাজে ব্যবহার করুন।

প্রসঙ্গত, গত ২৯ জুলাই রাজধানীর কুর্মিটোলার বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের বাসের চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হয়। এ ছাড়া আহত হয় বেশ কয়েকজন। নিহত শিক্ষার্থীরা হলো শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে এরই মধ্যে ২০ লাখ টাকার অনুদান দিয়েছেন। নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের পক্ষ থেকেও পাঁচ লাখ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নয়টি দাবি করেছে। তাদের সব দাবি মেনে নেওয়ার কথা জানিয়েছে সরকার।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত