তিন মাস সুন্দরবনে পর্যটন নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব

প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০১৮, ১৪:০৮

সাহস ডেস্ক

বন্যপ্রাণীর প্রজনন মৌসুম জুন থেকে আগস্ট মাস। ওই তিন মাস সুন্দরবনে পর্যটন নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দিয়েছে পূর্ব সুন্দরবন প্রজনন বিভাগ। বিভাগের কর্মকর্তাদের দাবি, ওই মৌসুমে পর্যটনের কারণে বন্যপ্রাণীর বংশবিস্তারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাহমুদুল হাসান জানান, তাদের প্রস্তাব অনুমোদিত হলে আগামী বছর থেকে এ নির্দেশনা কার্যকর হতে পারে।

খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মো. আমির হোসাইন চৌধুরী জানান, কোনও নির্দিষ্ট সময় পর্যটন নিষিদ্ধের বিষয়ে আগে বিভিন্ন পর্যায়ে মতবিনিময় করা হবে। পরে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রা, মায়া হরিণসহ বনের প্রায় ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণীর প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে নির্দিষ্ট এই প্রজনন মৌসুমে সব ধরনের পর্যটন নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ (বাগেরহাট) থেকে খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষকের মাধ্যমে প্রধান বন সংরক্ষকের (সিসিএফ) কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। পৃথিবীর বৃহত্তম এই বনের বন্যপ্রাণীর অবাধ বিচরণ ও বংশবিস্তারের লক্ষ্যে বন বিভাগের সদর দপ্তরে পাঠানো এ প্রস্তাব ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগ।

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ সূত্র থেকে জানা যায়, বিশ্ব ঐতিহ্য (ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড) হিসেবে স্বীকৃত এই বনের ছয় হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের বাংলাদেশ অংশে রয়েছে বাঘ, চিত্রা ও মায়া হরিণ, বিলুপ্তপ্রায় ইরাবতীসহ বিভিন্ন প্রজাতির ডলফিন, লোনা পানির কুমির, বন্য শুকর ও উদবিড়ালসহ ৩৭৫ প্রজাতির প্রাণী। সুন্দরবনে ২০০৪, ২০০৭, ২০১১ ও ২০১৫ সালের জরিপে দেখা গেছে, বেঙ্গল টাইগার ও হরিণসহ বন্যপ্রাণীর আধিক্য রয়েছে এমন এলাকাগুলোতেই পর্যটকরা ভ্রমণে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন। জলবায়ু পরিবর্তনসহ মানুষসৃষ্ট নানা কারণে সুন্দরবনের প্রাণীকূল সংকটের মধ্যে রয়েছে। বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যেই সুন্দরবন থেকে বিলুপ্ত হয়েছে দুই প্রজাতির হরিণ, দুই প্রজাতির গন্ডার, এক প্রজাতির মিঠা পানির কুমির ও এক প্রজাতির বন্য মহিষ।

সূত্র আরও জানায়, জুন থেকে আগস্ট এই তিন মাস সুন্দরবনের বাঘ ও হরিণসহ বহু সংখ্যক বন্যপ্রাণীর প্রজনন মৌসুম। পর্যটকদের কারণে বন্যপ্রাণীর অবাধ বিচরণ ও প্রজননে বাধার সৃষ্টি হয়, ফলে তাদের বংশ বিস্তারেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এই অবস্থায় প্রজনন মৌসুমের তিন মাস পর্যটন নিষিদ্ধ করার একটি প্রস্তাব খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মো. আমির হোসাইন চৌধুরীর কাছে গত মাসে পাঠানো হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত