বিনামূল্যে দাফনের ব্যবস্থা ও বৃদ্ধাশ্রম নির্মাণের পরিকল্পনা

প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০১৮, ১৮:২২

সাহস ডেস্ক

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য ৩ হাজার ৫৯৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। নগর ভবনে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ সম্মেলন কক্ষে ডিএসসিসি মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন আজ বুধবার (২৫ জুলাই) এ বাজেট ঘোষণা করেন।

গত অর্থবছর ডিএসসিসি’র বাজেট ছিল ৩ হাজার ৩৩৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। সে তুলনায় এবার ২৬১ কোটি ৮ লাখ টাকা বেশি বাজেট রাখা হয়েছে। বাজেটে রাজস্ব বাবদ আয় প্রস্তাব করা হয়েছে ৯০৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা। আর সরকারি ও বৈদেশিক উৎস থেকে আয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৫৫৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।

এবারের বাজেটে ধনি-গরিব সব নগরবাসীর জন্য বিনামূল্যে দাফন ও সৎকারের ব্যবস্থা রাখার পাশাপাশি পরিবারে অবহেলিত জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের জন্য ডিএসসিসি এলাকায় একটি বৃদ্ধাশ্রম নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স, হোল্ডিং ট্যাক্স, জন্ম নিবন্ধনসহ অন্যান্য সেবা কার্যক্রম অনলাইনভিত্তিক করতে জোরালো কার্যক্রম গ্রহণ করার সুপারিশ রয়েছে এই বাজেটে।

মেয়র বলেন, ঢাকা এখন উন্নয়নের স্রোতধারায় বদলে যাওয়া নগরী। অনেকেই আলোকিত এই সিটি দেখতে আসেন।

মেয়র তার বাজেট বক্তৃতায় বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে নিজস্ব আয়ের অন্যতম খাত বাজার সেলামী। বাজার সেলামি বাবদ আয় ধরা হয়েছে ৩০৫ কোটি টাকা ও বাজার ভাড়া বাবদ ৩০ কোটি টাকা, ট্রেড লাইসেন্স বাবদ ৮০ কোটি টাকা, এবং সম্পত্তি হস্তান্তর বাবদ ১শ’ কোটি টাকা আয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

এছাড়া রাস্তা খনন ফি বাবদ ২০ কোটি টাকা, অস্থায়ী পশুর হাট ইজারা বাবদ ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা, বাস-ট্রাক টার্মিনাল থেকে ৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা, যন্ত্রপাতি ভাড়া বাবদ ৫ কোটি টাকা, শিশু পার্ক থেকে ৫ কোটি টাকা, কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া বাবদ ২ কোটি টাকা, বিজ্ঞাপন কর বাবদ ৩ কোটি টাকা, ক্ষতিপূরণ (অকট্রয়) বাবদ ১ কোটি টাকা এবং পেট্রোল পাম্প বাবদ ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা আয় হবে বলে মেয়র আশা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, সরকারি মঞ্জুরী (থোক) খাতে ৭০ কোটি ও সরকারি বিশেষ মঞ্জুরী (থোক) বাবদ ৪৩৯ কোটি টাকা ৮৬ লাখ টাকা এবং সরকারি ও বৈদেশিক সহায়তামূলক প্রকল্প খাতে ২ হাজার ৪৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা সাহায্য হিসেবে পাওয়ার সম্ভাবনা নিয়েও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাজেটের ব্যয়ের খাতগুলো উল্লেখ করে সাঈদ খোকন বলেন, বেতন ভাতা বাবদ ৩৪০ কোটি টাকা, সড়ক ও ট্রাফিক অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন খাতে ৭৪২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা, ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ/উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ৩৯৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা, জ্বালানি, পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ খাতে ১০৯ কোটি টাকা, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ২৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাবদ ২৬ কোটি টাকা, বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্প খাতে ১৫ কোটি টাকা, অপ্রত্যাশিত উন্নয়ন খাতে ব্যয়ের জন্য ৫ কোটি টাকা, বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম সরবরাহ বাবদ ৭৫৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

কবরস্থান, শশ্মান ঘাট সংস্কার ও উন্নয়ন খাতে ৪২ কোটি ৫০ লাখ টাকা, বিজ্ঞাপন, প্রচারণা ও জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক খাতে ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা, নাগারিক বিনোদনমূলক সুবিধা উন্নয়ন খাতে ১৪৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, পরিবেশ উন্নয়ন খাতে ১৩৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, প্রশিক্ষণ ও বিভিন্ন সংস্থার চাঁদা বাবদ ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা, ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন খাতে ১৭৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা, পাবলিক টয়লেট নির্মাণ বাবদ ৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা, পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিবাস নির্মাল বাবদ ৬৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা, বাস্তবায়িত প্রকল্পের বকেয়া ম্যাচিং ফান্ড বাবদ ৪৩৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, জবাইখানা নির্মাণ বাবদ ৬৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, মাতৃসদন খাতে ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিশেষ উদ্যোগ খাতে ১০ কোটি ৭০ লাখ টাকা এবং ল্যান্ডফিল রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন বাবদ ১২১ কোটি ৭২ লাখ টাকা ব্যয় বরাদ্দ রাখা হয়েছে বলে মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন জানান।

বাজেট ঘোষণার সময় সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলালসহ প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন ওয়ার্ড কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত