আ.লীগ কর্মীদের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পড়তে বললেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ : ৩০ জুন ২০১৮, ১৫:৩০

সাহস ডেস্ক

মানুষের কল্যাণে এবং মানুষের জন্য রাজনীতি করতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’ পড়তে বললেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। 

আজ শনিবার (৩০ জুন) দুপুরে গণভবনে দেশজুড়ে আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাদের নিয়ে বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ পরামর্শ দেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার এ দেশের মানুষের জন্য আজীবন কাজ করেছেন। অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছেন মানুষ ও দেশের কল্যাণে।  তার আদর্শে গড়ে ওঠে দেশের কল্যাণে আপনাদেরও কাজ করতে হবে। তবেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, মানুষ দল ত্যাগ করে মন্ত্রিত্বের জন্য, কিন্তু জাতির পিতা মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দলকে গড়ে তুলেছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করেছিলেন মানুষকে ভালোবেসে। 

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা জাতির পিতার লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’ বইগুলো পড়বেন। এগুলো পড়লেই জানতে পারবেন এ দেশের স্বাধীনতা ও মানুষের কল্যাণ এবং সমৃদ্ধ সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করতে জাতির পিতার চিন্তা-ভাবনার কথা। 
 
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এ পর্যন্ত যা পেয়েছে, তা রক্ত দিয়ে অর্জন করতে হয়েছে। শুরু থেকেই পাকিস্তানিরা এখানকার মানুষকে অত্যাচার নির্যাতন করেছে, বঞ্চিত করেছে। 

বিদেশে জাতির পিতার সঙ্গে ভ্রমণের একটি অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আব্বার চিন্তা-ভাবনায় ছিল এ দেশের মানুষ। একদিন ইউরোপের একটি শহরে যাচ্ছি আমার স্বামীর কর্মস্থলে। বাবাও ছিলেন সঙ্গে।

‘রাস্তার পাশে সুন্দর ও সাজানো গ্রাম দেখে তিনি দাঁড়িয়ে যেতেন। জিজ্ঞাসা করলেই বললেন- মা, আমরা একদিন স্বাধীন হবো। এরপর আমি আমাদের গ্রাম ও ইউনিয়নকে এভাবেই গড়ে তুলবো।’

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্যটাই ছিল বাংলাদেশের গ্রামকেন্দ্রিক। এজন্য স্বাধীনতার অল্পদিনের মধ্যেই আমাদের একটি সংবিধান উপহার দেন। তিনি গ্রাম ও সেখানকার মানুষের সকল কল্যাণের জন্য কর্মসূচি দিয়ে গেছেন। আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা তাকে হারিয়েছি। তিনি ভালোবাসা ও মমতা দিয়ে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। 

জিয়াউর রহমানের শাসন ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই সময়ই ঋণখেলাপি সংস্কৃতি সৃষ্টি করেছে তারা। বিভিন্ন সময় ১৯টি ক্যু হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রায় শেষ করে দেওয়া হয়েছিল। বিমান বাহিনীর অফিসার-সৈনিকদের হত্যা করা হয়েছে।  একের পর এক ক্যু হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কারাগারে নিক্ষেপ করে নানা ধরনের নির্যাতন করা হয়েছে। 
    
দেশে ফিরে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার কথা জানিয়ে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, সবাইকে রেখে বিদেশে গেলেও ফিরতে হয়েছে রিক্ত হাতে। কিন্তু দেশের মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। পেয়েছি সবচেয়ে বড় পরিবার আওয়ামী লীগকে। 

‘আমরা সেনা ছাউনি থেকে বাংলাদেশের মানুষকে গণতন্ত্র এনে দিয়েছি। পুরো রাজনীতিকে কলুষিত করে দিয়েছে তারা।’

বিএনপি ও জামায়াত জোটের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরপর ক্ষমতায় এলেন জিয়াউর রহমানের স্ত্রী। তারা বাংলাদেশের ভাগ্য পরিবর্তন করতে না পারলেও নিজেদের  ভাগ্য ঠিকই পরিবর্তন হয়েছে।  ভাঙা স্যুটকেস ছাড়া জিয়া কিছু রেখে যাননি। জিয়ার প্যান্ট কেটে কেটে তারেক ও কোকোর প্যান্ট বানানো হতো। তাহলে এতো টাকা এলো কোথা থেকে। এবার এতিমের টাকাও মেরে খেয়েছে।

‘স্বাধীনতাবিরোধীদের হাতে দেশের পতাকা তুলে দিয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধীরা ক্ষমতায় এলে কিভাবে দেশের উন্নয়ন হবে। তারা তো দেশের স্বাধীনতাই চায়নি,’ যোগ করেন শেখ হাসিনা। 

সাহস২৪.কম/আল মনসুর 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত