ইয়াবা পাচারে রোহিঙ্গা শিশুদের ব্যবহার করছে মাদক ব্যবসায়ীরা

প্রকাশ | ২৮ মে ২০১৮, ১৬:৩০

অনলাইন ডেস্ক

ইয়াবা পাচারের জন্য টেকনাফ ও উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের রোহিঙ্গা শিশুদের ব্যবহার করছে মাদক ব্যবসায়ীরা।  তাদের পরিবারের সম্মতিতেই বাড়তি উপার্জনের লোভে ইয়াবা পাচারে যুক্ত হয়।

সোমবার (২৮ মে) বেলা ১২ টার দিকে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার দেবদাস ভট্টাচার্য এক ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান। রবিবার বিকালে রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকার পূর্ব গাওয়াইর এলাকা থেকে এক শিশুসহ দুই রোহিঙ্গাকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।  তাদের কাছ থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

 

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ইয়াবা পাচারের সঙ্গে রোহিঙ্গা শিশুদের জড়ানো হচ্ছে। বেশি টাকার লোভে রোহিঙ্গা পরিবারগুলো মাদক পাচারে তাদের শিশুদের পাঠিয়ে সহযোগিতা করছে। গ্রেফতার রোহিঙ্গা সেলিম মোল্লা উখিয়ার লেদা ক্যাম্পে পরিবারসহ থাকে। ১২ বছরের আফজার তার আপন বড় ভাইয়ের ছেলে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসে রেজওয়ান নামে এক মাদক ব্যবসায়ীর সঙ্গে সেলিমের পরিচয় হয়। রেজওয়ানের গ্রামের বাড়ি পিরোজপুর জেলায়। ইয়াবা ব্যবসা করার জন্য সে কক্সবাজারেই বাসাভাড়া নিয়ে থাকে। ঢাকায় মামুন তার প্রধান সহযোগী। রেজওয়ান পাঁচ হাজার ইয়াবার চালান ঢাকায় পাঠানোর জন্য রোহিঙ্গা সেলিম মোল্লার সঙ্গে ২৫ হাজার টাকায় চুক্তি করে। এরপর সেলিম তার ভাতিজা আফছারকে নিয়ে ঢাকায় ইয়াবা নিয়ে আসার পরিকল্পনা করে।

৫০ পিস করে ইয়াবা ক্যাপসুল আকারে তৈরি করে স্কচটেপ ও পলিথিনে মুড়িয়ে। এরপর ৩০ টি ক্যাপসুল পানি দিয়ে আফছারকে গিলিয়ে দেয়। এমন আফছারকে এবং ৭০ টি ইয়াবা ক্যাপসুল সেলিম নিজে গিলে খায়। মোট ৫ হাজার ইয়াবা  এভাবে তারা গিলে পেটে করে নিয়ে আসে ঢাকায়। আসার পথে তারা কোনোকিছু খায় না। এমনকি ওষুধ খেয়ে নেয় যাতে পায়খানা না হয়। ঢাকায় এসে তারা ফের ওষুধ খায় মলত্যাগ করার জন্য। এভাবে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে ইয়াবা পাচার করে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।

রবিবার বিকালে আফছার ও তার চাচা সেলিম উখিয়া থেকে বাসে করে ঢাকায় আসে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের আটক করে ডিবি। এরপর ইয়াবা চালান গ্রহণের জন্য অপেক্ষমাণ মামুন ও তার সহযোগীদের আটক করা হয়।

অতিরিক্ত কমিশনার জানিয়েছেন, এর আগেও আফছার ও তার চাচা সেলিম একাধিকবার ঢাকায় একইভাবে ইয়াবা নিয়ে আসে। তারা কখনও বাসে, কখনও ট্রেনে আসে। আরও রোহিঙ্গা শিশু আছে যাদেরকে এভাবে ইয়াবা পাচারের সঙ্গে তারা জড়িয়েছে মাদক ব্যবসায়ীরা। শিশু আফছার এই ইয়াবা চালান পৌঁছে দিতে পারলে দশ হাজার টাকা পেতো। তার চাচা সেলিম পেতো ১৫ হাজার টাকা। এতো কম সময়ে বেশি টাকা আয়ের লোভে এই পথে রোহিঙ্গা শিশুদের তাদের পরিবার মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে তুলে দিচ্ছে।

সাহস২৪.কম/রনি/আল মনসুর