চন্দ্রপুর যেনো মৃত্যুপুর, থেমে গেছে ঈদ আনন্দ

প্রকাশ | ২৮ জুন ২০১৭, ২১:০৬

আসাদুজ্জামান সাজু

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা কলাবাড়ী এলাকায় গত শনিবার সড়ক দুর্ঘটনায় ঈদে ফেরা লোকজনের নিহত ১৭ জনের মধ্যে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নে ১১ জনের বাড়ি।

সোমবার ঈদের দিন বিকালে নিহত ও আহতদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাদের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। ওই এলাকার সব কিছু যেনো থেমে গেছে। নেই ঈদের আনন্দ। গোটা চন্দ্রপুর ইউনিয়ন নাম যেনো মৃত্যুপুর হয়ে গেছে। এলাকার লোকজন সান্তনা দিতে এসে নিজেরাই কেঁদে ফেলছে নিহতদের পারিবারের সদস্যদের আহাজারি দেখে।

নিহতদের মধ্যে সাদ্দাম হোসেন ও তার ছোট ভাই আলমগীর হোসেন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের লতাবর গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে। এ দুর্ঘটনায় সাদ্দামের স্ত্রী শরিফা খাতুন ও আলমগীরের স্ত্রী খাদিজা খাতুন আহত হন। ওই ট্রাকে থাকা শরিফা খাতুনের ভাই দেলোয়ার হোসেনও নিহত হয়েছেন।

ওই এলাকার কলেজ ছাত্র মশিউর রহমান, আলী আখতার ও জমসের আলী বলেন, আজ ঈদ এটা মনেই হচ্ছে না। যে দিকে তাকাই লোকজনের চোখে জল। একটু পর পর কবরের দেখা মিলছে। আমাদের দুই বন্ধু তারা তাদের বাবাকে হারিয়েছেন। এক বন্ধু তার ভাইকে হারিয়েছেন। আমরা কাছের এক বড় ভাইকে হারিয়েছি। যারা মারা গেছেন সবাই আমাদের পরিচিত। তাদের নিয়ে প্রতি বছর ঈদে অনেক মজা করতাম। আজ তারা নেই, কাদের সাথে মজা করবো।

দুই ছেলের শোকে কাতর সাদ্দাম ও আলমগীরের মা বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। তিনি বিলাপ করে বলছিলেন, শুক্রবার বিকালে তার ছেলে সাদ্দাম ও ছেলের বউ শরিফার সঙ্গে শেষবারের মতো কথা হয়। সেসময় তারা তাকে জানিয়ে ছিলেন, মা আমি বাড়ির সবার জন্য নতুন কাপড় নিয়েছি।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবুল ফয়েজ মো. আলাউদ্দিন খান বলেন, ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২০ হাজার, লাশ দাফনের খরচ ও আহতদের চিকিৎসার জন্য প্রত্যেককে ৫ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে। তাদের আরো কিভাবে সহযোগিতা করা যায় সেই চেষ্টা চলছে।