৪ অজানায় জহির রায়হান

প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০১৯, ১২:৩২

১. ১৯৫২ সা‌লের ফেব্রুয়ারীর ২১ তা‌রিখের দুপু‌রে আমতলায় যে মি‌টিং এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে ১৪৪ ধারা ভাঙা হ‌বে, সে মি‌টিং থে‌কে প্রথম যে মি‌ছিল‌টি বের হয় সবার আগে, সেই প্রথম ১০ জ‌নের একজন ছি‌লেন জ‌হির রায়হান।

২. কোলকাতায় 'স্টপ জেনোসাইড'-এর প্রিমিয়ার দেখার পর মুগ্ধ সত্যজিৎ রায় জহির রায়হানকে জড়িয়ে ধরেছিলেন। সত্যজিৎ রায় ভূয়সী প্রসংসা করে বলেছিলেন-শুধুমাত্র 'স্টপ'এই কথাটি দিয়েই সে পুরো ব্যাপারটা থামাতে প্রয়াস নিয়েছিল এবং সেটা সে (জহির রায়হান) খুব ভালভাবে করতে পেরেছিল।

সূত্র: টিভি সাক্ষাতকারে বিশিষ্ট চলচ্চিত্র সমালোচক অনুপম হায়াৎ

৩. "...যখন কিছু কিছু লোককে দেখেছি নিজেদের ফিল্মের প্রিন্ট বিক্রি করে আর্থিক সাচ্ছল্য বাগাতে সচেষ্ট, ঠিক তখনি মুক্তিযুদ্ধের ভেতর দেখেছি জহিরকে তার ‘জীবন থেকে নেয়া’র ভারতে বিক্রয়লব্ধ সমুদয় অর্থ বাংলাদেশ সরকারকে দান করতে, স্বীয় অর্থকষ্ট থাকা সত্ত্বেও। ঘরে স্ত্রী সুচন্দা জ্বরে অজ্ঞান, বড় ছেলে অপুও অসুস্থ। জহির ঘরে নেই। স্টুডিওতে।

রাত নেই, দিন নেই, ঘুম নেই- ‘স্টপ জেনোসাইড’ তৈরি করছে।

ও জানতো বাঙলার স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রচারই যথেষ্ট নয়।

বিশ্বের সকল পরাধীন শোষিত মানুষের সংগ্রামের সাথে বাঙালীর স্বাধীনতা আন্দোলনের একাত্মতা বোঝাতে হবে এই ছবির মাধ্যমে।"

- চলচ্চিত্র পরিচালক আলমগীর কবির 
(জীবনী গ্রন্থমালা, অমর একুশে বাংলা একাডেমীর নিবেদন : ১৯৮৮)

৪. ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে তিনি অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং গ্রেফতার হয়েছিলেন। মুক্তি পাওয়ার পর তাঁর খুব ইচ্ছে ছিলো ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট নিয়ে একটি সিনেমা বানাবেন। সেই সিনেমার চিত্রনাট্যও তিনি তৈরী করেছিলেন। তবে তৎকালীন পাকিস্তানী স্বৈরাচারী সরকারের নানাবিধ বাঁধার কারণে তিনি সিনেমাটি নির্মাণ করতে পারেন নাই।

১৯৭০ সালের শুরুর দিকে তিনি একটি সিনেমা নির্মাণ শুরু করেন। সিনেমাটির নাম - "তিনজন মেয়ে ও এক পেয়ালা বিষ"। এই সিনেমাটা বানানোর মূল উদ্দেশ্য ছিলো- পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বাঙালীদের প্রতিবাদী করে তোলা। সিনেমাটির নাম পরবর্তীতে রাখা হয় - "জীবন থেকে নেওয়া"। মুক্তিকামী মানুষকে যে সিনেমাটা মুক্তির স্বপ্ন দেখিয়েছিলো।

দেশপ্রেমিক এই নির্মাতার নাম - জহির রায়হান।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত