পৃথিবীর নিঃসঙ্গতম হাঁস বলে খ্যাত ‘ট্রেভর’ আর নেই

প্রকাশ | ২৯ জানুয়ারি ২০১৯, ১৬:০৯

অনলাইন ডেস্ক

পৃথিবীর নিঃসঙ্গতম হাঁস বলে খ্যাত ‘ট্রেভর’ আর নেই। কুকুরের আক্রমণে ট্রেভরের মৃত্যুতে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপদেশ নিউইতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

নিজ প্রজাতির একমাত্র হাঁস হওয়ায় দ্বীপদেশটিতে ট্রেভর ছিল এক মহাতারকা। ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাস থেকে হাঁসটি ওই দ্বীপে বসবাস করে আসছিল। কিন্তু কীভাবে সে ওই দেশে পৌঁছেছিল তা অস্পষ্ট।

স্থানীয় একটি ছোট্ট খানাখন্দের ভেতর বাস করত ট্রেভর। সেখানেই দ্বীপবাসী নিয়মিত তার খাবারদাবার সরবরাহ ও দেখাশোনা করত। 

ট্রেভরের ফেসবুক পেজের উদ্যোক্তা ও নিউইর চেম্বার অব কমার্সের প্রধান রে ফিন্ডলে জানান, গত বছর জানুয়ারিতে হওয়া এক বিশাল ঝড়ের পরপরই ট্রেভরের আবির্ভাব ঘটে। ও ঝড়ে ভেসে এসেছিল বলেই আমরা ধরে নিই।

ফিন্ডলে বলেন, ‘সম্ভবত ও নিউজিল্যান্ড থেকে এসেছিল। টোঙ্গা বা অন্য কোনো প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ থেকেও এসে থাকতে পারে। ট্রেভর ছিল ম্যালার্ড প্রজাতির বুনোহাঁস। নিউজিল্যান্ডের এক রাজনীতিকের নামের সাথে মিল রেখে ওর নাম রাখা হয় ট্রেভর ম্যালার্ড। আর ওই নামটাই চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।’

‘নিউইতে কোনো নদী, ঝরনা বা জলাশয় না থাকায় ওই ছোট্ট খানাখন্দটাকেই বসবাসের জায়গা হিসেবে বেছে নেয় হাঁসটি। সংক্ষিপ্ত জীবদ্দশায় ও সুখেই কাটিয়েছে। অভাবের মধ্যে যেটা, তা হলো যে ও ছিল নিঃসঙ্গ।’

‘হাঁসটি যেখানে বসবাস করত স্থানীয়রা নিয়মিত সেই জায়গা পর্যবেক্ষণ করত। এমনকি তার বাসস্থানে পানির পরিমাণ কমে গেলে দেশটির ফায়ার সার্ভিস সেখানে গিয়ে পানি সরবরাহ করত।’

‘ও নিয়মিত স্থানীয়দের বাগানে উড়ে বেড়াত। লোকজন ওকে উপহার দিতো মজার খাবারদাবার। ভুট্টা, ডাল, ওট এসব খেত ট্রেভর।’

‘দ্বিপবাসী অনেকেরই দেশের বাইরে থেকে ট্রেভরের জন্য একটি সঙ্গী নিয়ে আসার ব্যাপারে প্রস্তাব ছিল, কিন্তু ওর থাকার জায়গাটি একটির অধিক হাঁসের বসবাস উপযোগী ছিল না বলে জানান ফিন্ডলে।’

আবেগজড়ানো কণ্ঠে বলেন ফিন্ডলে বলেন, ‘অবশ্য এখানে থাকা অবস্থায় ও (ট্রেভর) একটা মোরগ, একটা মুরগি আর একটা ভেকা পাখির সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছিল। ওরা ওর আবাসস্থলের আশপাশেই বসবাস করত। ট্রেভরকে ছাড়া আজ সেই মোরগ, মুরগি আর ভেকা পাখিটা অবহেলিতের মতো শুকনো খানাখন্দের পাশে ঘুড়ে বেড়াচ্ছে। একটা বছর ধরে অফিসে যাওয়া আসার পথে আমি ওখানে থেমে ওকে ওট খাওয়াতাম। ট্রেভর অনেকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। সবাই ওকে খুব মিস করবে।’