সরিষা ফুলের মধুর বৈশিষ্ট্য

প্রকাশ : ০৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৪:৪১

সাহস ডেস্ক

সব মধুর বৈশিষ্ট্য এক না। কোনটার রং লাল,কালো আবার সাদা। কোন মধু জমে যায় আবার কোনটা জমে না। একই মৌমাছি কিন্তু ফুলের ভিন্নতার কারণে মধুর বৈশিষ্ট্য ভিন্ন হয়। সরিষা ফুলের মধুর বৈশিষ্ট্য এই মধু খুবই মিষ্টি। রং হবে হালকা হলুদ বর্ণের।

 তবে এই মধুর সবচেয়ে বড় যে বৈশিষ্ট্য, তা আমাদের অনেকের জানা নেই। — সরিষা ফুলের মধু শীতকালে অল্প কিছু দিনের মধ্যেই জমে যায়, আর গরমের সময় জমতে একটু দেরি হয়, কয়েক সপ্তাহ বা ২/৩ মাস বা এর চেয়ে একটু বেশি সময় লেগে যেতে পারে। তবে জমবেই। যদি না জমে, তবে বুঝতে হবে মধুতে সমস্যা আছে। বোতলে রাখা সরিষা ফুলের মধুর পুরোটাই জমে যেতে পারে অথবা বেশিরভাগ অংশ বা আংশিক জমে যাবে। সরিষা ফুলের মধু জমে অনেকটা ঘিয়ের রূপ ধারণ করে। জমে যাওয়া মধু মোলায়েম, নরম, ছোট ছোট দানাদার হবে।

মধু জমে যায় কেন?
অনেকে সরিষা মধু জমাকে ভুল বোঝেন। তারা একে ভেজাল মনে করেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে মধু জমে যাওয়া একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। তরল থেকে দানাদার অর্ধ-কঠিন অবস্থায় যাওয়ার এ প্রক্রিয়াকে গ্র্যানুলেশন (granulation) বা কঠিন মৌচাক থেকে আলাদা করার পর মধু যত দ্রুত জমে, চাকের ভেতর মোমের কোষে থাকলে তত দ্রুত জমে না। প্রতিটি মধুর স্ফটিকায়নের একটা নির্দিষ্ট সময় আছে। জমে যাওয়ায় মধুর রং বদলে যায়, তরল থেকে দানাদার হয়ে যায় কিন্তু মধুর গুণগত মান কমে না। 

সাধারণত সরিষা মধু তে ৭০% এর বেশি শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট ও ২০% এর কম পানি থাকে। তার মানে স্বাভাবিকভাবে পানিতে যে পরিমাণ চিনি দ্রবীভূত হয়, মধুতে তার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে থাকে। চিনির মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণ দ্রবণকে অস্থিতিশীল করে। একারণেই মধুর জমাট বাধা শুরু হয়। পানি থেকে গ্লুকোজ আলাদা হয়। গ্লুকোজ স্ফটিক আকারে জমতে থাকে। আর দ্রবণটি আস্তে আস্তে সাম্যাবস্থার দিকে যায়। 

এছাড়া আরো কিছু নিয়ামক রয়েছে যা স্ফটিকায়ন শুরু করা, তরান্বিত করা ও স্লথ করায় ভূমিকা রাখে। গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ ছাড়া মধুর অন্যান্য কার্বোহাইড্রেট উপাদান, এমাইনো এসিড, প্রোটিন, খনিজ, এসিড ইত্যাদিও স্ফটিকায়নের প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে। এছাড়া ধুলা, পরাগরেণু, মোমের কণা বা বহিরাগত স্ফটিকের উপস্থিতিতেও স্ফটিকায়ন তরান্বিত হতে পারে। 

আপেক্ষিক আর্দ্রতা ও প্যাকেটজাত করার ধরণও পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। মধুর ধরনের উপর ভিত্তি করে কক্ষ তাপমাত্রায় স্ফটিকায়ন শুরু হতে কয়েক সপ্তাহ, কয়েক মাস এবং বিরল ক্ষেত্রে কয়েক দিন লাগতে পারে।

সাহস২৪,কম/এবি

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত