কমলগঞ্জে হিমাগার না থাকায় রবিশস্য নিয়ে বিপাকে চাষিরা

প্রকাশ | ১৯ জানুয়ারি ২০১৯, ১৪:৩৩

পিন্টু দেবনাথ

শস্য ভান্ডার খ্যাত বৃহত্তর সিলেটের মৌলভীবাজারের সীমান্তবর্তী কমলগঞ্জ উপজেলার কৃষকরা খাদ্য যোগানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। চলতি মৌসুমে টমেটোর ব্যাপক চাষাবাদ এবং বাম্পার ফলনও হয়েছে। টমেটো, বেগুন, আলু, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিমসহ শাকসবজির চাষাবাদে কৃষকদের উৎসাহ উদ্দীপনার কমতি নেই। তবে উৎপাদনের পর দাম ভালো না থাকায় অনেকেই নামে মাত্র মূল্যে উৎপাদিত সবজি বিক্রি করতে বাধ্য হন। ফলে এসব কৃষকরা লাভের মুখ দেখতে পান না বলে অভিযোগ তুলেছেন।

কৃষি অধ্যূষিত এই উপজেলায় একটি হিমাগার স্থাপিত হলে চাষি পর্যায়ে এই সমস্যা কাটিয়ে লাভবান ও কৃষি উৎপাদনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন।

কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে এপর্যন্ত ২৫০ হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ হয়েছে। মোট রবিশস্য চাষাবাদ হয়েছে ১৫শ’ হেক্টর জমি। তবে গ্রাফটিং পদ্ধতিতে কেউ কেউ বারো মাসও টমেটো চাষাবাদ করেন। শীত মৌসুম আসার আগেও ৩০ থেকে ৫০ হেক্টর পরিমাণ জমিতে গ্রাফটিং টমেটোর চাষাবাদ করা। এছাড়াও বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, আলু, শিম, মূলাসহ ও শীতকালীন শাকসবজির ব্যাপক চাষাবাদ হচ্ছে। 

জেলার মধ্যে কৃষি উৎপাদনে এ উপজেলা ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেছে। উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার কমবেশি স্থানে রবিশস্য উৎপাদন হয়। তবে আদমপুর, মাধবপুর ও আলীনগর ইউনিয়নে অধিক পরিমাণে শাক-সবজি চাষাবাদ হয়। এসব ইউনিয়নে সরিষারও আবাদ করা হয়। তবে সময় মতো কৃষকরা ন্যায্য দাম না পেয়ে নামে মাত্র মূল্যে সবজি বিক্রি করতে বাধ্য হন।

চাষীরা বলেন, যারা টমেটো বাজারজাত করছেন তারা কিছুটা লাভবান হচ্ছেন। তাছাড়া কয়েকদিন পর যারা টমেটো বাজারজাত করবেন তারা সেভাবে লাভবান হতে পারবেন না। গাছে গাছে এখন টমেটো, বেগুন ধরতে শুরু করেছে। সেগুলো বাজারে তোলার পর দাম একেবারেই কমে যায়। 

এই উপজেলায় একটি হিমাগার বা সংরক্ষণাগার থাকলে দাম কমে গেলে সেখানে রেখেও পরে বিক্রি করে যথেষ্ট লাভবান হওয়ার সুযোগ ছিল।

কৃষকরা বলেন, এ উপজেলায় কৃষকদের সুবিধার্থে একটি হিমাগার বা সংরক্ষণাগার স্থাপনের দাবি দীর্ঘদিনের। অপরদিকে সরিষা প্রক্রিয়াজাতকরণে একটি কারখানা থাকলে চাষীদের জন্য অধিকতর সুবিধা বয়ে আনতো। অতীতে বিভিন্ন সময়ে সংরক্ষণাগার স্থাপনের দাবি জানানো হলেও এ ব্যাপারে কারো নজর নেই। খাদ্য যোগানে এই অঞ্চলে কৃষি উৎপাদনে সংরক্ষণাগার, সরিষার কারখানা দ্রুত স্থাপনে সরকারের নিকট তারা জোর দাবি জানান।

কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ সাহা বলেন, টমেটোসহ রবিশস্যের জন্য কমলগঞ্জ ব্যাপক পরিচিত। এসব সবজির ভালো চাষাবাদ ও উৎপাদন হচ্ছে। তবে এখানে একটি হিমাগার বা সংরক্ষণাগার থাকলে সেটি কৃষকদের জন্য আরও ভালো হতো এবং কৃষকরা বিপুল উৎসাহ নিয়ে কৃষিতে অধিকতর মনোযোগী হয়ে উঠতেন।

সাহস২৪.কম/ইতু/রিয়াজ