লালমনিরহাটে আগাম পাকা ধানে কৃষকের মুখে হাসি

প্রকাশ : ২২ অক্টোবর ২০১৮, ১৫:০২

সাহস ডেস্ক

মাটি ও মানুষের সরকার আওয়ামী লীগের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে উত্তরাঞ্চল থেকে মঙ্গা নামে বিদায় নিয়েছে অনেক আগে। কালের বিবর্তন ও প্রযুক্তির ছোঁয়ায় দিন দিন তা বদলে গেছে। এখন আর আগের মতো আশ্বিন-কার্তিক মাসে বেকার সময় কাটাতে হয় না কৃষি শ্রমিকদের। এখন কৃষিশ্রমিদের কাজ করার জন্যই বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যেতে হয়।

আশ্বিন মাসের শেষে ও কার্তিক মাসের শুরু থেকে ক্ষেতের ধান পাকতে শুরু করে। লালমনিরহাটেও আগাম জাতের ধান পাকতে শুরু করেছে। কৃষি শ্রমিকরাও কাজ পেতে শুরু করেছে। অন্যদিকে কৃষকের মুখে হাসি ফুটছে।

আগাম জাতের নতুন পাকা ধান কেটে ঘরে তুলছে কৃষক। এ ফুটছে হাঁসি। আগাম জাতের এ ধান অগ্রহায়ন না আসতেই কৃষকের ঘরে ঘরে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে দিয়েছে। আশ্বিনেই যেন নবান্নের সাড়া পড়েছে জেলায় কৃষকের ঘরে ঘরে।

ধান কাটার পর আবার সেই জমিতে আলু, শাক, সবজি আবাদের প্রস্তুতি নিচ্ছে এই অঞ্চলের কৃষকরা। একই জমিতে বছরে তিন থেকে চার ফসল আবাদ, ধানের দাম ও গো-খাদ্য হিসেবে খড়েরও দাম ভালো পাওয়ায় দিন দিন আগাম জাতের ধান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে কৃষক।
জেলার বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে দেখা যায় ধান ক্ষেতের মাঝে উঁকি দিচ্ছে আগাম জাতের সোনালি ধান। আর সেই ধান কাটতে ও মাড়াই করতে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা। যাদের আবার ধান কাটা ও মাড়াই করা হয়েছে। তারা জমি চাষ করে নতুন ফসলের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট এর উদ্ভাবিত আগাম জাতের ধানগুলো হলো, বিনা-৭, ব্রী ৩৩, ব্রী ৫৬, ব্রী ৬২, পূর্বাচী ও হাইব্রীড। আর এই ধানগুলো চাষাবাদের জন্য কৃষককে উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছে লালমনিরহাটের বেসরকারি সংস্থা নজীর।

হাতীবান্ধা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবারে এ উপজেলায় আমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ হাজার ৪শত ৯৫ হেক্টর জমি। আর অর্জিত হয়েছে ১৯ হাজার ৫শত ১০ হেক্টর জমি। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। তবে গত বছর অর্জিত হয়েছে ১৯ হাজার ৫শত ৮৫ হেক্টর জমি। এ বছর আগাম জাতের ধান চাষাবাদ করা হয়েছে, ১৮ন শ’ ২৮ হেক্টর জমিতে।

হাতীবান্ধা উপজেলার আরাজী শেখ সুন্দর গ্রামের কৃষক সামছুল ইসলাম বলেন, আমি গত বছর ২ বিঘা জমিতে আগাম জাতের ধান আবাদ করেছিলাম। ফলন ভালো পাওয়ায় এ বছর ৭ বিঘা জমিতে আগাম জাতের ধান আবাদ করেছি। এর মধ্যে ৮০ শতক জমির ধান ইতিমধ্যে কাটা হয়েছে। ৮০ শতক জমির ধান হয়েছে ৩৭ মণ।

উপজেলার পারুলিয়া চরের কৃষক একাব্বর হোসেন জানান, এই অঞ্চলে আগাম জাতের ধান আবাদ করে ধানের ফলন ও দাম দুটোই ভালো পাওয়া যাচ্ছে। ধান ৮০০ থেকে ৯০০টাকা দরে বিক্রয় করা হচ্ছে। একই এলাকার কৃষক মমিনুর রহমান জানান, রোগ বালাই কম, একই জমিতে বছরে তিন থেকে চার ফসল আবাদ, ধানের দাম ও গো-খাদ্য হিসেবে খড়েরও দাম ভালো পাওয়ায় দিন দিন মানুষ আগাম জাতের ধান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে।

হাতীবান্ধা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, দিন দিন কৃষক আগাম জাতের ধান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে। আমরা আগাম জাতের ধান উৎপাদনে কৃষককে বিভিন্ন ভাবে উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছি। আগাম জাতের ধান চাষ হওয়ায় বাজারে চালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। আগাম জাতের ধান বিঘা প্রতি ১৪ থেকে ১৫ মণ হয়। ৯০ থেকে ১১০ দিনের মধ্যে এই ধান কেটে ঘরে তোলা যায়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত