সুনামগঞ্জে ধানে ব্লাস্ট রোগ আক্রান্তে আতংকিত কৃষক

প্রকাশ : ১১ এপ্রিল ২০১৮, ১৬:০৪

নুর উদ্দিন

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, ধর্মপাশা, ছাতক, দোয়ারাবাজার, জগন্নাথপুর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার হাওরে বোরো জমিতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে ছত্রাকজনিত ব্লাস্ট রোগ। এ রোগ দেখা দেওয়ায় কৃষকরা আতংকিত। ছত্রাকজনিত ব্লাস্ট রোগের সঙ্গে পরিচয় না থাকায় প্রতিরোধের উপায়ও জানা নেই কৃষকের। চোখের সামনেই নষ্ট হচ্ছে হাওরের বিস্তৃত জমির ব্রি-২৮ জাতের ধান।

আক্রান্ত জমির ধান গাছে কৃষকরা ছত্রাকনাশক ট্রুপার স্প্রে ব্যবহার করেও ধানগাছ রোগ মুক্ত হচ্ছে না। নতুন এই রোগের বিষয়ে গবেষণা করতে বৃহস্পতিবার সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষক টিম সুনামগঞ্জের হাওরে আসছেন বলে জানা গেছে।

গতবছর চৈত্র মাসে সম্পূর্ণ বোরো ধানগাছ পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল। ধানগাছ পঁচে পানি বিষাক্ত হয়ে মাছ ও হাঁস মারা যাচ্ছে।

কৃষকরা জানান, গত বছরের অকাল বন্যা হাওরের সম্পূর্ণ ধান তলিয়ে নেওয়ায় সরকারি ও কৃষক পর্যায়ে হাওর থেকে বীজ সংগ্রহ করা যায়নি। ফলে দেশের ব্লাস্ট আক্রান্ত অঞ্চল থেকে বীজ দেওয়া হয়েছে হাওরের কৃষকদের। ব্লাস্ট আক্রান্ত এলাকার বীজ হাওরে প্রথম বারের মতো ব্লাস্ট রোগ ছড়িয়ে কৃষকের সর্বনাশ ডেকে আনার পাশাপাশি আগামীতে এই রোগ আরো ভয়াবহ হয়ে দেখা দিবে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

সুনামগঞ্জ কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, এ বছর জেলায় ২ লাখ ১৯ হাজার ৯৪ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। দেশি প্রজাতির ধান ৪৯১২ হেক্টর, উফশী ১৮৩৫৫ হেক্টর এবং হাইব্রিড ৩২ হেক্টর চাষ হলেও কৃষি বিভাগ প্রদত্ত হাইব্রিড ও উফশী জাতের বীজেই ব্লাস্ট দেখা দিয়েছে।

সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক স্বপন কুমার সাহা বলেন, ঠান্ডা-গরম আবহাওয়াজনিত কারণ, হাওরের জমিতে পানি শুকিয়ে যাওয়াসহ নানা কারণে এই রোগের দেখা দিয়েছে। জমি আক্রান্ত হওয়ার সাথে সাথে স্প্রে ছিটানো না হলে ফসল নষ্ট হয়ে যায়।

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যায়ের এগ্রোনমি এন্ড হাওর এগ্রিকালচার বিভাগের অধ্যাপক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, জলবায়ুজনিত পরিবর্তনের কারণে হাওরে এই রোগ মহামারির মতো ছড়িয়েছে। মৌসুমের শুরুতে বীজতলা শোধন করে এবং রোপণের পর পটাশিয়াম সার প্রয়োগ করা হলে এই সমস্যা হতো না।

সাহস২৪.কম/রিয়াজ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত